গত লোকসভা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি ছিল সকলের ঘরে বিদ্যুৎ। আর এ বার লোকসভা ভোট ফের দরজায় কড়া নাড়তেই লোডশেডিংকে ইতিহাস করে দেওয়ার নীতি আনতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তাই আগামী এপ্রিল থেকে তারা চালু করতে চায় লোডশেডিং হলেই বিদ্যুৎ সংস্থাকে জরিমানার নতুন নিয়ম। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ চুরি গেলে বা পরিষেবা দেওয়ার সময়ে তা নষ্ট হলে, তার জন্য যাতে যথেচ্ছ বিদ্যুৎ মাসুল বাড়ানো না যায়, তার বন্দোবস্তও করতে চাইছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ বলেন, ‘‘খসড়া বিদ্যুৎ মাসুল নীতি তৈরি হচ্ছে। যার আওতায় ২০১৯ সালের মার্চের পর থেকে লোডশেডিং হলে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাকে জরিমানা দিতে হবে। সংবহন বা বাণিজ্যিক কারণে হওয়া ক্ষতি ১৫ শতাংশের বেশি হলে, মাসুল বাড়িয়ে তা পূরণও করা চলবে না।’’
এই ব্যবস্থা চালু হলে, দেশে ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে লোডশেডিং কার্যত ইতিহাস হয়ে যাবে বলে বিদ্যুৎ মন্ত্রকের দাবি। তারা মনে করে, বিদ্যুতের জোগানে অভাব নেই। তাই যৌক্তিকতা নেই লোডশেডিং হওয়ারও।
রাজ্যগুলি অবশ্য খসড়া মাসুল নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে। তাদের অভিযোগ, পুরোপুরি ক্ষেত্রটিকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার আশঙ্কা করছে তারা।
খসড়ায় প্রস্তাব
• লোডশেডিং হলেই জরিমানা বিদ্যুৎ সংস্থার
• বিদ্যুৎ চুরি বা নষ্ট হলে যথেচ্ছ মাসুল বাড়ানো নয়
• বিদ্যুৎ মাসুল নীতি চালু হোক এপ্রিলেই
বিদ্যুৎ মন্ত্রকের একটি কমিটি তাই এখন খসড়া নীতির পর্যালোচনা করছে। তা সত্ত্বেও আগামী এপ্রিলের আগেই নতুন ব্যবস্থা চালু করা যাবে বলে আশাবাদী মন্ত্রক। বিদ্যুৎ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে বিদ্যুৎ চুরি ও বাণিজ্যিক কারণে ক্ষতির (বিদ্যুৎ সংবহণের সময় লোকসান ইত্যাদি) পরিমাণ ৩০ শতাংশের বেশি। খাতায়-কলমে কম দেখানো হলেও, বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলি মাসুল বাড়িয়ে সেই ক্ষতি পূরণ করে নেয়।
এ দিকে, মোদী সরকার ২০২২ সালের মধ্যে অপ্রচলিত উৎস থেকে ১৭৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির লক্ষ্য স্থির করেছিল। বিদ্যুৎ ও অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রীর দাবি, ওই সময়ের মধ্যে ২,০২২ গিগাওয়াট অপ্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যে জুলাই থেকে চাষিদের মধ্যে সৌর বিদ্যুৎ জনপ্রিয় করতে ১.৪ লক্ষ কোটি টাকার কুসুম (কিষাণ উর্জা সুরক্ষা ও উত্থান মহাভিযান) প্রকল্প চালু করতে চলেছে কেন্দ্র।
এর আওতায় চাষিদের সৌর বিদ্যুতে চলা জলের পাম্প দেওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে দেওয়া হবে ২৭.৫ লক্ষ সৌর পাম্প। যার মধ্যে ১০ লক্ষ পাম্প গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। কৃষকেরা ০.৫ থেকে ২ মেগাওয়াটের সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা বসাতে পারবেন। এ ছাড়া সেচের পাম্প চালানোর জন্য আলাদা ফিডারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মন্ত্রীর যুক্তি, ডিজেলে পাম্প চললে চাষিদের সেচের খরচ অনেক বেড়ে যায়। সৌর পাম্পে সুরাহা হতে পারে তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy