সূচনা: নয়ডার কারখানা উদ্বোধনে নরেন্দ্র মোদী ও যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন। সোমবার। ছবি: এএফপি।
ঢালাও বিজ্ঞাপনে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ঘোষণা ছিল, নয়ডায় স্যামসাংয়ের মোবাইল কারখানায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কাজ পাবেন মোট ৩৫ হাজার জন।
সোমবার কারখানা উদ্বোধনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন বলেন, চাকরি হবে ২,০০০।
আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সঙ্গে সেই একই কারখানার উদ্বোধনে এসে জানালেন, অন্তত এক হাজার নতুন কর্মসংস্থান তো হবেই!
এখানেই শেষ নয়। যে দক্ষিণ কোরীয় বহুজাতিকের হাত ধরে এই কাজের সুযোগ তৈরি হওয়ার দাবি, সেই স্যামসাংয়ের মুখে কুলুপ। এ নিয়ে কোনও কথা বলেননি ভারতে সংস্থার প্রেসিডেন্ট-সিইও এইচ সি হং।
ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, যে কারখানাকে বিশ্বের বৃহত্তম মোবাইল তৈরির আস্তানা বলে এত প্রচার, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মুকুটে নতুন পালক বলে এত ঢাকের বাদ্যি, সেখানে মাত্র ১,০০০ নতুন কর্মসংস্থানের কথা বুক ঠুকে বলতে পারলেন মোদী? তা-ও আবার ভোটের দিকে পা বাড়াতে শুরু করার বছরে। সেই উত্তরপ্রদেশে, যে রাজ্যে আসনজয়ের উপরে অনেকখানিই নির্ভর করছে দিল্লি দখলের ভাগ্য! কাজের সুযোগ তৈরির বিষয়ে কি মোদী সরকার তবে এতটাই কোণঠাসা? উল্টো মতও অবশ্য কানে এল। কেউ কেউ বললেন, যোগীর ৩৫ হাজারি প্রচারের ফানুস এক ধাক্কায় হাজারে নামিয়ে দিলেন মোদী।
নয়ডায় স্যামসাংয়ের কারখানায় এখন বছরে ৬.৮ কোটি মোবাইল তৈরি হয়। সেখানে আরও ৩৫ একরে ৪,১৯৫ কোটি টাকা লগ্নিতে উৎপাদন বাড়াচ্ছে সংস্থাটি। বছরে তৈরি হবে ১২ কোটি মোবাইল। তাদের দাবি, বিশ্বে এটিই বৃহত্তম মোবাইল কারখানা।
এই সম্প্রসারিত প্রকল্পের উদ্বোধন এ দিন নাটকীয় ভঙ্গিতেই করেছেন মোদী। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টকে সঙ্গে নিয়ে নয়ডায় এসেছেন মেট্রো রেলে। অফিস ফেরতা যাত্রীদের হাত নেড়ে অভিবাদনও কুড়িয়েছেন। দাবি করেছেন, এই প্রকল্প তাঁর সাধের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ মুকুটের পালক। খোদ মুন বলেন, এই কারখানা থেকে রফতানি হবে পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকায়। যোগী বলেছেন, দু’হাজার বছর আগে দক্ষিণ কোরীয় রাজকুমারের বিয়ে হয়েছিল অযোধ্যার রাজকুমারীর সঙ্গেই। কিন্তু এত কিছুর পরেও মোদীর মুখে কাজের সুযোগ তৈরির দাবি কিন্তু থমকেছে হাজারেই।
অনেকে বলছেন, ভোটের দিকে পা বাড়ানো মোদী বিলক্ষণ জানেন ২০১৯ সালে অর্থনীতির হাল এবং কাজের সুযোগ তৈরির কষ্টিপাথরেই তাঁকে জরিপ করবে দেশ। আর দু’ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি তেমন সুবিধার নয়। অর্থনীতির পালে পুরোদস্তুর হাওয়া লাগেনি। কথা রাখা যায়নি কাজের সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রেও। এই অবস্থায় এ দিন তাঁর দাবি, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র দৌলতে শুধু মোবাইল কারখানার সংখ্যাই ২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২০।
কিন্তু বৃহত্তমতেই কাজ মোটে এক হাজার? মুচকি হেসে এক বিজেপি নেতা বলে গেলেন, ‘‘দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ভুল বোধ হয় আর করতে চান না মোদীজি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy