Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Agriculture

ঝড়বৃষ্টিতে মার খাবে পাট চাষ, দুশ্চিন্তায় রাজ্য

প্রতি বছর কেন্দ্র ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করলেও, চাষিরা ওই দামে সব পাট বেচতে পারেন না। তার উপর হালে এই সমস্যার দোসর হয়েছে প্রবল ঝড়বৃষ্টি।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ০২:৫৪
Share: Save:

এমনিতেই বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায় না বলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশে পাট চাষ কিছুটা হলেও কমেছে। প্রতি বছর কেন্দ্র ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করলেও, চাষিরা ওই দামে সব পাট বেচতে পারেন না। তার উপর হালে এই সমস্যার দোসর হয়েছে প্রবল ঝড়বৃষ্টি। ফলে রাজ্যে এ বছর কাঁচা পাটের উৎপাদন বেশ খানিকটা ধাক্কা খাবে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই মরসুমে ৭২ লক্ষ বেল (১ বেল সমান ১৮০ কেজি) কাঁচা পাট উৎপাদন হবে বলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়া ও অন্যান্য কারণে বড় জোর ৬০ লক্ষ বেল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সাধারণত মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে জমিতে পাটের বীজ বোনা শুরু হয়। কিন্তু এ বছর মার্চের শেষ থেকে গোটা এপ্রিল, এমনকী মে মাসেও যে ভাবে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লাগাতার ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, জানাচ্ছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে এর প্রভাব পড়েছে সব থেকে বেশি। জমিতে বৃষ্টির জল জমেছে। ঝড়ের দাপটে ভেঙেছে গাছের মাথা। কোথাও বড় পাট গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। তাঁদের মতে, এর ফলে কাঁচা পাটের উৎপাদন ধাক্কা খেতে বাধ্য।

ক’বছর আগেও রাজ্য-সহ সারা দেশে অন্তত ৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হত। আর্থিক ক্ষতির আঘাতে তা কমে প্রায় ৭ লক্ষ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। পাট চাষে কৃষকদের উৎসাহ হারিয়ে ফেলাও যার অন্যতম কারণ। সূত্রের দাবি, সম্প্রতি দিল্লিতে কেন্দ্রের পাট পরামর্শদাতা পর্ষদে বিষয়গুলি নিয়ে কথা হয়েছে। সমস্যার কথা জানে পাট নিগমও। গত বছরও শুরুতে দেশে ৮৫ লক্ষ বেল কাঁচা পাট উৎপাদন হবে ধরা হয়েছিল। কিন্তু তা দাঁড়ায় ৭৬ লক্ষ। যার ৮৫% পশ্চিমবঙ্গে। অথচ আবহাওয়া চাষের অনুকূল ছিল।

সঙ্কট

• ভাল দাম না-পাওয়ায় বাজারে পাট বিক্রি কমেছে

• কমেছে পাট চাষের জমিও

• উৎসাহ হারাচ্ছেন কৃষকেরা

• সমস্যা আরও অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে ঝড়বৃষ্টি

• আশঙ্কা, কমতে পারে উৎপাদন

পাট চাষিদের সমস্যার খবর নবান্নে কৃষি দফতরেও পৌঁছেছে। দফতরের এক কর্তা জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কিছু জেলায় চাষে ক্ষতির তথ্য পেয়েছেন। চাষিদের পরামর্শ দেওয়া শুরুও হয়েছে। ওই কর্তার আশা, মরসুমের এখনও অনেকটা সময় বাকি। ফলে খুব বেশি ক্ষতি হবে বলে তাঁরা মনে করছেন না।

গত বছর অভিযোগ উঠেছিল, ঠিক দাম না পেয়ে রাজ্যের চাষিরা কম দামে পাট বেচতে বাধ্য হয়েছিলেন। যা নিয়ে বিক্ষোভও হয়। এ বছর পাটের সহায়ক মূল্য ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৩,৭০০ টাকা করা হয়েছে। তবে উদ্বেগ যাচ্ছে না। তা আরও বাড়িয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Agriculture Jute Cultivation পাট চাষ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE