Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নীরব-দায় সবার কেন, উঠল প্রশ্ন

পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে নীরব মোদী ও মেহুল চোক্সীর প্রতারণার ঘটনা সামনে আসার পরে এলওসি এবং এলওইউ মারফত ঋণ নেওয়ায় বিধিনিষেধ বসিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৫
Share: Save:

লেটার অব ক্রেডিট (এলওসি), লেটার অব আন্ডারটেকিংয়ে (এলওইউ) রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিষেধাজ্ঞা চাপানোয় এত দিন আশঙ্কা প্রকাশ করছিল শিল্প। সেই আশঙ্কা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটাই এ বার জানাল বাণিজ্য মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তড়িঘড়ি এই নিষেধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগে কাঠগড়ায় তুলল শীর্ষ ব্যাঙ্ককে।

পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে নীরব মোদী ও মেহুল চোক্সীর প্রতারণার ঘটনা সামনে আসার পরে এলওসি এবং এলওইউ মারফত ঋণ নেওয়ায় বিধিনিষেধ বসিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সে জন্য সোমবার অকালি দলের নেতা নরেশ গুজরালের কমিটির তোপের মুখে পড়ল তারা। কমিটির যুক্তি, এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি ঘাবড়ে গিয়ে, আগুপিছু না ভেবে নেওয়া সিদ্ধান্ত। হাল শোধরাতে অবিলম্বে তা ফের চালুর সুপারিশ করেছে তারা।

কমিটির অভিযোগ, এই নিষেধাজ্ঞার জেরে শিল্পে ঋণের খরচ বেড়েছে। ধাক্কা লেগেছে কর্মসংস্থানে। এলওসি, এলওইউ দেখিয়েই আমদানিকারীরা ঋণ নেন। ফলে তাঁদের সমস্যা হচ্ছে।

রিপোর্ট বলছে

• রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এলওইউ, এলওসিতে নিষেধাজ্ঞা তাড়াহুড়োয় নেওয়া সিদ্ধান্ত। এতে ঋণের খরচ বেড়েছে প্রায় ২ থেকে ২.৫ শতাংশ।

• আমদানিকারীদের বিদেশি মুদ্রায় ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

• এ দেশে রফতানির প্রায় ২০ শতাংশ আমদানি করা কাঁচামাল থেকে তৈরি। ফলে উৎপাদনের খরচ বেড়েছে।

• অনেক ক্ষেত্রে ঋণ বিলিতে অযথা রক্ষণশীল হচ্ছে ব্যাঙ্ক। ধার দিতে বন্ধক চাইছে অযৌক্তিক মাত্রায়।

• ঋণ পেতে অসুবিধায় পড়ছে ছোট-মাঝারি শিল্প।

• সার্বিক ভাবেও ধাক্কা খাচ্ছে।

• ভুগছে কর্মসংস্থান।

• দ্রুত এলওইউ, এলওসি চালু হোক। বরং প্রতারণা রুখতে বোজানো হোক ফাঁকফোকর।

নীরব-মেহুলের প্রতারণা ও তার পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অতি সাবধানী পদক্ষেপ ব্যাঙ্কগুলির মধ্যেও ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ কমিটির। তাদের মতে, সেই কারণেই ব্যাঙ্কগুলি ঋণ বিলিতে কঠিন শর্ত চাপাচ্ছে। ফলে সব থেকে বেশি সমস্যায় ছোট-মাঝারি শিল্প। রফতানি ক্ষেত্রেও ঋণ প্রায় ২৪% কমেছে।

শীর্ষ ব্যাঙ্কের হিসেব

• ঋণে প্রতারণার ফলে অনাদায়ি ঋণ ২৯,৭৩৪ কোটি টাকা।

• প্রতারকের সংখ্যা ২৭৭।

• ইচ্ছাকৃত ভাবে শোধ না করায় অনাদায়ি ঋণের অঙ্ক পৌঁছেছে ১১,৯১৪ কোটি টাকায়।

(২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৫ কোটি টাকার বেশি ঋণের হিসেব)

এলওসি, এলওইউ-র বিকল্প হিসেবে স্টেট ব্যাঙ্ক ছ’মাসের ঋণ গ্যারান্টি হিসেবে একটি ব্যবস্থা এনেছে। সেখানে যাতে ছোট-মাঝারি শিল্প বাদ না পড়ে, তা নিয়ে সতর্ক করেছে কমিটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE