প্রতীকী ছবি।
ডলার ৭০ টাকার বেশি। পেট্রল বেড়ে লিটারে ৮০। উঠছে ডিজেলও। তবু গত সপ্তাহের শেষে ২৮৪ পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্স ফের ৩৮ হাজার ছুঁইছুঁই। নিফ্টি ভেঙেছে আগের নজির। পৌঁছেছে সর্বকালীন উচ্চতায়, ১১,৪৭১ পয়েন্ট। দেখে মনে হয়, তা হলে হয়তো এ সবে ভয় পাচ্ছে না ভারতের দুই প্রধান সূচক। তোয়াক্কা করছে না আমেরিকার সঙ্গে তুরস্ক ও চিনের উত্তপ্ত হওয়া সম্পর্ক এবং শুল্ক যুদ্ধের ঘোরালো পরিস্থিতিকে। বরং তার তুরুপের তাস চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে দেশের বেশ কিছু সংস্থার প্রত্যাশা ছাপানো আর্থিক ফল ও জুলাইয়ে কিছুটা মাথা নামানো খুচরো ও পাইকারি বাজারের মূল্যবৃদ্ধি। তবে আসল কথা হল, বাজার এতটা উঠলেও আশঙ্কার মেঘ যে ঘন হচ্ছে, তা স্পষ্ট।
চিন্তায় ফেলেছে বর্ষা। তা স্বাভাবিক হওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও, দেশের সর্বত্র সমান বৃষ্টি হচ্ছে না। বন্যায় কোথাও ফসল নষ্ট হচ্ছে। কোনও রাজ্যে কম বৃষ্টির কারণে বীজ রোপণ করাই যাচ্ছে না। সামগ্রিক ভাবে এখনও বর্ষার ঘাটতি আছে গোটা দেশে। ফণা তুলেছে ডলার এবং বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম। ফলে বাড়ছে ভারতের আমদানির খরচ। চও়়ড়া হচ্ছে বাণিজ্য ঘাটতি। প্রমাদ গুনছে আমদানি নির্ভর শিল্প। এরই মধ্যে গাড়ির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিছু সংস্থা।
মূল্যবৃদ্ধির হার এখন কমলেও, ডলারের দাম ক্রমশ বাড়তে থাকলে তা নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকার উপায় নেই। অবশ্য ডলার বাড়ার সুবিধা পাবে তথ্যপ্রযুক্তির মতো রফতানিকারী সংস্থাগুলি। ডলার ভাঙিয়ে তারা যখন অনেকটাই বেশি টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে দেখতে পাবে।
কেরলের ভয়াবহ বন্যার প্রভাবও পড়বে স্থানীয় এবং জাতীয় অর্থনীতিতে। আশঙ্কা, তুরস্ক ও চিনের সঙ্গে আমেরিকার সংঘাত আগামী দিনে ভোগাবে বহু দেশকে।
এই অবস্থায় সুদ নির্ভর মানুষের চিন্তা অবশ্য কিছুটা কমেছে। বছর দুয়েক কম থাকার পরে, আবার বাড়তে শুরু করেছে তার হার। প্রবীণ নাগরিকেরা এখন বেশ কিছু প্রকল্পেই ৮% বা তারও বেশি সুদ পাচ্ছেন। বেসরকারি বন্ডে সুদ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯%। ১০ বছর মেয়াদি সরকারি ঋণপত্রের ইল্ড ৭.৮২%। ইকুইটিতে বড় মেয়াদে আকর্ষণীয় লাভ ও করজনিত সুবিধার জন্য বহু মানুষ এখন এসআইপির পথে মিউচুয়াল ফান্ড মারফত ইকুইটি ও বন্ড বাজারে পরোক্ষ ভাবে অংশ নিচ্ছেন।
প্রথম ত্রৈমাসিক ফল প্রকাশের শেষ লগ্নে লাভ-লোকসানের হিসেব বার করেছে বেশ কিছু সংস্থা। এর মধ্যে লাভ দ্বিগুণ হওয়ার তথ্য প্রকাশ করেছে টাটা স্টিল। ৯২১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১,৯৩৪ কোটি। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েলের নিট লাভ ২,২৮২ কোটি টাকা বেড়ে পৌঁছেছে ৬,৮৩১ কোটি টাকায়।
২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মোট আয়কর রিটার্ন দাখিল হয়েছে ৬.৯২ কোটি, যা আগের বছরের তুলনায় ১.৩১ কোটি বেশি। ওই বছর আয়কর আদায়ও পৌঁছেছে সর্বকালীন উচ্চতায়। ২০১৭-১৮ সালে আয়কর সংগ্রহের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১০ লক্ষ কোটি টাকা। মানুষের মধ্যে কর সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সংক্রান্ত আইন মেনে চলার আরও প্রবণতা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy