Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

উৎসবে ঢালাও খরচে রাশ টেনে নজরে রাখুন সঞ্চয়

সামনে উৎসবের মরসুম। বাড়তি খরচের পাশাপাশি নানা সূত্র থেকে এখন টাকা আসার সময়। যাঁরা শেয়ারে লগ্নি করেছেন, তাঁদের জন্য চলছে ডিভিডেন্ডের ভরা মরসুম। বোনাস বাবদ টাকা চলতি মাসেই এসে যাবে অনেকের হাতে। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বকেয়া বেতন পাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং পেনশন প্রাপকদের।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৮
Share: Save:

সামনে উৎসবের মরসুম। বাড়তি খরচের পাশাপাশি নানা সূত্র থেকে এখন টাকা আসার সময়। যাঁরা শেয়ারে লগ্নি করেছেন, তাঁদের জন্য চলছে ডিভিডেন্ডের ভরা মরসুম। বোনাস বাবদ টাকা চলতি মাসেই এসে যাবে অনেকের হাতে। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বকেয়া বেতন পাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং পেনশন প্রাপকদের। এই সময়ে ব্যবসায়ীদেরও হাতে আসে একটু বাড়তি টাকা।

অনেকের ক্ষেত্রে পুজো, দীপাবলি, ভাইফোঁটা ইত্যাদি বাবদ খরচ মিটিয়েও কিছু টাকা হাতে থেকে যায়। বহু ক্ষেত্রেই এই উদ্বৃত্ত তহবিল ৪ শতাংশ সুদে অলস ভাবে পড়ে থাকে সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আগে থেকেই একটু তৎপর হলে এই টাকা বর্তমান বাজার অনুযায়ী উপযুক্ত প্রকল্পে খাটিয়ে ছোট থেকে বড় মেয়াদে বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব। লগ্নি করা যায় কর সাশ্রয়ের জন্যও। দেখতে হবে, বাড়তি টাকা যেন অনাবশ্যক কাজে খরচ না হয়ে যায়। এই কারণে উৎসব এবং বেড়ানো বাবদ টাকা সরিয়ে রেখে উদ্বৃত্ত টাকা লগ্নি করে ফেলতে হবে সময় নষ্ট না-করে। কিন্তু কোথায়? দেখে নেব এক নজরে।

১) চড়া সুদে ঋণ নেওয়া থাকলে অথবা ক্রেডিট কার্ড বাবদ দেনা থাকলে তার সবটা, সম্ভব না-হলে কিছুটা মিটিয়ে দিন। সুদ খাতে সাশ্রয় হবে।

২) বাজারে এখন পরপর আসছে বন্ড ইস্যু। সুদের হার বেশ আকর্ষণীয়। ব্যাঙ্ক সুদের তুলনায় ১.৫ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ বেশি। মেয়াদ ৩ থেকে ৭ বছর। ‘ট্রিপল-এ’ রেটিং যুক্ত বন্ডে লগ্নি করলে ঝুঁকি কম থাকে। বাজারে এই ধরনের বন্ড এবং ডিবেঞ্চারের এখন চাহিদা যথেষ্ট। এই কারণে আবেদন করতে হবে ইস্যু খোলার দিনই, সম্ভব হলে প্রথম ঘণ্টাতেই। আগে আবেদন করলে বন্ড পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। অতীতে ইস্যু করা বন্ড কেনা যায় শেয়ার বাজার থেকেও।

৩) আবেদন করা যায় নতুন শেয়ার ইস্যুতেও (আইপিও)। শেয়ার বাজার চাঙ্গা থাকায় এখন ভাল ইস্যুতে আকর্ষণীয় লাভের সুযোগ আছে। গত সপ্তাহে শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ হয়েছে আরবিএল ব্যাঙ্ক শেয়ার। ২২৫ টাকায় ইস্যু করা শেয়ার এখন বাজারে হাতবদল হচ্ছে ৩০০ টাকার উপরে। অর্থাৎ মাত্র কয়েক দিনের লগ্নিতে সফল আবেদনকারীদের লাভ হয়েছে ৩৩ শতাংশ। সজাগ থাকুন। সামনে আরও ইস্যু আসছে।

৪) ঝুঁকি বাগে রাখতে চাইলে বন্ড ফান্ডে লগ্নি করুন অন্ততপক্ষে ৩ বছরের জন্য। এখানে আয় হতে পারে ৮.৫ শতাংশের আশেপাশে। ৩ বছর ধরে রাখলে খুব বেশি কর দিতে হয় না। বাজারে সুদের হার কমলে বাড়তে পারে ন্যাভ।

৫) ভবিষ্যতে যাঁদের সোনার প্রয়োজন হবে, তাঁরা সরকারি গোল্ড বন্ডে কিছু টাকা লগ্নি করতে পারেন। লগ্নির উপর এখানে সুদ দেওয়া হয় বার্ষিক ২.৭৫ শতাংশ হারে।

৬) যাঁদের কর সাশ্রয়ের জন্য লগ্নি করা প্রয়োজন, তাঁরা টাকা জমা করতে পারেন পিপিএফ অ্যাকাউন্টে অথবা লগ্নি করতে পারেন মিউচুয়াল ফান্ডের ইএলএসএস অ্যাকাউন্টে।

৭) যাঁদের কোনও স্বাস্থ্যবিমা এখনও করানো হয়নি, তাঁরা এই সুযোগে একটি বিমা করিয়ে নিতে পারেন, যাতে প্রতি বছর এই মরসুমেই প্রিমিয়াম দিতে হয়।

৮) বেশি আয়ের লক্ষ্য থাকলে একটু ঝুঁকি নিয়েও বাজার একটু পড়লে লগ্নি করুন সুবিন্যস্ত ইক্যুইটি অথবা ব্যালান্সড ফান্ডে। একলপ্তে লগ্নি করতে না-চাইলে টাকা ব্যাঙ্কে রেখে এসআইপি অ্যাকাউন্ট খুলুন কোনও ভাল মিউচুয়াল ফান্ডে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

festival expenditure
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE