Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ব্যাঙ্কের হাতে নগদ জোগাতে দাওয়াই

অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় জেরবার দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি হালে ঋণ দেওয়া নিয়ে বেশ সতর্ক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৬
Share: Save:

অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় জেরবার দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি হালে ঋণ দেওয়া নিয়ে বেশ সতর্ক। অথচ এই মুহূর্তে আর্থিক সমস্যায় খাবি খাওয়া বেশ কিছু সংস্থাকে বাঁচাতে ব্যাঙ্ক ঋণ ছাড়া গতি নেই। বিশেষত হালে ব্যাঙ্ক নয় এমন কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফসি) প্রকট হয়েছে পুঁজির অভাব। এতটাই যে, তার ধাক্কা এসে পড়ছে শেয়ার বাজারের গায়ে। এই অবস্থায় স্বল্প মেয়াদে ঋণের সঙ্কট নিয়ে মূলধনী বাজারের ভয় দূর করতে ও ব্যাঙ্কগুলির হাতে আরও সহজে নগদ জোগানোর পথ করতে বৃহস্পতিবার কিছু পদক্ষেপ করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

জরুরি ভিত্তিতে ঋণ বা অন্য খাতে বাড়তি নগদ টাকার ব্যবস্থা করার জন্য প্রতিটি ব্যাঙ্কেই একটি বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। যা কার্যত একটি তহবিল। পোশাকি নাম লিকুইডিটি কভারেজ রেশিও বা এলসিআর। ওই তহবিলে বাজার থেকে কেনা ঋণপত্র জমা রাখে ব্যাঙ্কগুলি। এত দিন প্রয়োজনের সময় ঋণপত্রগুলির ১১% বেচে তারা নগদের সংস্থান করতে পারত। এ দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে যে, এখন থেকে ওই খাতে ১৩% ঋণপত্র বিক্রি করতে পারবে তারা। এই তহবিলে রাখা ঋণপত্র চটজলদি ভাঙিয়ে নগদে রূপান্তরিত করতে পারে ব্যাঙ্কগুলি।

এ ছাড়া ব্যাঙ্কগুলিকে এখন আমানতের ১৫% টাকা স্ট্যাটিউটরি লিকুইডিটি রেশিও বা এসএলআর খাতে তুলে রাখতে হয়। শীর্ষ ব্যাঙ্কের নির্দেশ, এ বার তার থেকে ২% টাকা এলসিআর খাতে সরিয়ে রাখা যাবে। ফলে এই তহবিলের বহরও বাড়বে। উল্লেখ্য, মোট আমানতের ১৫% টাকা এসএলআর খাতে বাধ্যতামূলক ভাবে সরকারি ঋণপত্রে বিনিয়োগ করতে হয় ব্যাঙ্কগুলিকে।

এলসিআর তহবিলের টাকা আগের থেকে ২% বেশি ব্যবহারে সায় পাওয়ার ফলে ফলে ব্যাঙ্কগুলির হাতে নগদের জোগান বাড়বে। যা তারা ঋণ হিসাবে বাজারে বণ্টন করতে পারবে।

সম্প্রতি পরিকাঠামোয় ঋণদাতা সংস্থা ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএল অ্যান্ড এফএস) অনেক ক্ষেত্রে বাজার থেকে নেওয়া ঋণ শোধে ব্যর্থ হয়েছে। ১,০০০ কোটি ধার আদায়ে সিডবি তাদের দেউলিয়া আইনে এনসিএলটিতেও টেনে নিয়ে গিয়েছে। এর জেরে বিভিন্ন গৃহঋণ ও আর্থিক সংস্থার স্বাস্থ্য নিয়েই মূলধনী বাজারে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। তার পরেই অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আশ্বাস দেন যে, আইএল অ্যান্ড এফএসকে বাঁচাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বলা হয়, বিপদে পড়া বিভিন্ন সংস্থাকে বাঁচাতে পিছিয়ে থাকবে না ব্যাঙ্কগুলিও।

তবে শুধু আইএল অ্যান্ড এফএস নয়, এই মুহূর্তে নানা ক্ষেত্রে একাধিক সংস্থা আর্থিক সমস্যায় পড়েছে। ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি দেবব্রত সরকারের মতো ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে অন্তত যে সব ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা দিয়ে সংস্থাকে চাঙ্গা করে তোলার সম্ভব, সেখানে ঋণ দিতে ব্যাঙ্কগুলির হাতে যাতে নগদ টাকার অভাব না হয়, তা নিশ্চিত করাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই পদক্ষেপের লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bank Capital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE