নোট বাতিল। তড়িঘড়ি জিএসটি চালু। ঢালাও সংস্কারের ঢক্কানিনাদ। সর্বোপরি মোদী সরকারের ‘উচ্চাশা’ আগামী দশ বছরেও ভারতের গড় বৃদ্ধিকে টেনেটুনে ৭ শতাংশের উপরে তুলতে পারবে না। এমনই ইঙ্গিত দিল বুধবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট।
ভারতের অর্থনীতিকে এগিয়ে যাওয়ার রসদ জোগাতে কেন্দ্রের তৎপরতা ও ভারতের বিপুল সম্ভাবনা সত্ত্বেও আগামী দশ বছরে গড় বৃদ্ধি সেই ৭ শতাংশের আশেপাশেই থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট। তাদের হিসেবে ২০১৭ সালে বৃদ্ধি ৬.৭% ছুঁতে পারে। তবে ২০১৮-র ছবিটা কিছুটা উজ্জ্বল বলে আজ প্রকাশিত রিপোর্ট গ্লোবাল ইকনমিক্স প্রসপেক্ট-এ জানিয়েছে তারা। এ বছরে ৭.৩% ও তার পরের দু’বছর ২০১৯ ও ২০২০ সালে ৭.৫% বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
সমীক্ষাটি মোদী সরকারের সাফল্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে সরকারি মহলে অনেকে মনে করলেও, অর্থনীতিবিদদের এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, ইউপিএ জমানায় গড় বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৭%। মোদী সরকারের প্রথম দু’বছর ২০১৪-’১৫ ও ২০১৫-’১৬ সালেও তা ছিল যথাক্রমে ৭.৫ ও ৮ শতাংশ। ফলে সেখান থেকে ধরলে অর্থনীতি কতটা এগোতে পেরেছে, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের মতেও ক্ষমতায় আসার সময়ে অর্থনীতিকে ভাল অবস্থায় পেয়েছিলেন মোদী। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কম ছিল। বিশ্ব জুড়ে মন্দার মেঘ কেটে গিয়েছিল। ফলে অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলই। নোটবন্দি ও তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর জেরেই তাতে ছেদ পড়ছে বলে তাই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
বিশ্বব্যাঙ্কের ডেভেলপমেন্ট প্রসপেক্টস গ্রুপ-এর ডিরেক্টর এবং এই সমীক্ষার লেখক আইহান কোসেও বলেছেন, ‘‘আগামী দশকে ভারতের বৃদ্ধির রথ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় এগিয়ে যেতে পারে। তবে স্বল্প মেয়াদে তা ধাক্কা খেয়েছে।’’ ধাপে ধাপে ভারত এ ক্ষেত্রে ফের চিনকে টপকে যাবে বলে অবশ্য আশা করছেন তিনি। তার কারণ, চিনের আর্থিক বৃদ্ধি এগোচ্ছে বেশ ঢিমেতালে। ২০১৮-এ তা ৬.৪ শতাংশে নামবে বলে মনে করা হচ্ছে। পরের দু’বছরে তা নামতে পারে ৬.৩ ও ৬.২ শতাংশে।
ভারতকে তার সম্ভাবনা কাজে লাগানোর শর্ত অবশ্য বিনিয়োগ বাড়ানো, মন্তব্য করেন কোসে। আর, সেই লক্ষ্যে এগোতে হলে স্কুল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের সংস্কারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy