কয়েক বছর আগে মন্দার জেরে ধাক্কা খেয়েছে মার্কিন শহর ডেট্রয়েটের গাড়ি শিল্প। যার জেরে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করতে বাধ্য হয় জেনারেল মোটরস, ক্রাইসলারের মতো গাড়ি নির্মাতারা। আর এ বার ইউরোপেও চাহিদা কমার হাত ধরে কারখানার ঝাঁপ বন্ধ করছে একের পর এক গাড়ি সংস্থা। যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে বেলজিয়াম-ডাচ-জার্মানির সীমান্তে।
সম্প্রতি জার্মানির বোখুমে নিজেদের গাড়ি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে জেনারেল মোটরস। আর তার কয়েক দিন পরে সম্প্রতি বেলজিয়ামের গেঙ্ক-এ একই ভাবে কারখানা বন্ধের কথা জানিয়েছে ফোর্ডও। এই কারখানায় তৈরি মডেলগুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে স্পেনে। কম খরচে বিশ্বের অন্যত্র গাড়ি তৈরির লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এর জেরে ইউরোপের প্রাণকেন্দ্রে থাকা ওই শিল্পাঞ্চলে নেমে এসেছে আশঙ্কার ছায়া। তার সঙ্গেই আরও জোরালো হয়েছে ইউরোপীয় অঞ্চলে ত্রাণ প্রকল্পের দাবিও।
দীর্ঘ দিন ফোর্ডের এই কারখানায় কাজ করা এক কর্মী পিয়ের বুনেনের কথায়, প্রথম জীবন থেকেই এই কারখানা তাঁর রুজি জুগিয়েছে। হঠাৎ করে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন কী কাজ করবেন, তা-ই ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। একই অবস্থা ফোর্ডের প্রায় ১০ হাজার কর্মীরই। সংস্থা কর্মীদের বকেয়া ও বাড়তি ভাতা দিলেও তাঁদের বক্তব্য, তরুণ কর্মীরাই যেখানে কাজ পেতে হিমসিম খাচ্ছেন, সেখানে বয়স্কদের নতুন করে চাকরির সম্ভাবনা ক্ষীণ।
ষাটের দশক থেকেই উৎপাদন শিল্পে আলাদা জায়গা করে নেওয়া এই সীমান্ত অঞ্চলই শুধু নয়, সারা ইউরোপীয় ইউনিয়নেই এখন মন্দার জেরে মূল্যহ্রাসের আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় রেকর্ড বেকারত্বের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইউরোপীয় অর্থনীতি। যে কারণে আমেরিকার ধাঁচে নতুন করে ত্রাণ প্রকল্প চালুর জন্য ইউরোপের শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শিল্প।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সত্তর-আশির দশকে ধারণা ছিল বড় কারখানা মানেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উন্নতি হবে। তা কিছুটা ঠিকই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যদি সংস্থা নিজের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন না-ঘটায় অথবা বাজারের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে না-পারে, সে ক্ষেত্রে তাকে পিছিয়ে পড়তে হবে। যে কারণে ইউরোপীয় অঞ্চলে শিল্পের সঙ্গে উদ্ভাবনের যোগাযোগ আরও গভীর করার দাবিও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy