বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ঠিক প্রমাণ করে ফের বড় মাপের পতন দেখল শেয়ার বাজার। মঙ্গলবার সেনসেক্স পড়ল আরও ৩২২.৩৯ অঙ্ক। যার জেরে সূচক আবার নেমে এল ২৭ হাজারের ঘরে।
এ দিন বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্স থিতু হয় ২৭,৭৯৭.০১ অঙ্কে। আগের দিন অর্থাৎ সোমবার তা পড়েছিল ৩৩৮ পয়েন্ট। এবং এই নিয়ে টানা তিন দিনে সূচকটির পতন হল মোট ৭৬৫.৮১ পয়েন্ট।
ডলারের সাপেক্ষে এ দিন ৫ পয়সা পড়েছে টাকার দামও। বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম এসে দাঁড়ায় ৬১.৮৮ টাকায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে বাজারকে উৎসাহিত করার মতো তেমন কিছু না-থাকার কারণেই লগ্নিকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে মুনাফার টাকা তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এ দিন বিশেষ করে যে-সব শিল্পের শেয়ার দর পড়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ভোগ্যপণ্য, ব্যাঙ্ক, তেল পরিশোধন সংস্থা, বিদ্যুৎ, গাড়ি নির্মাতা সংস্থা ইত্যাদি।
বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমার ফলে আমদানির খরচ কমলেও, সোনা আমদানি বৃদ্ধির ফলে আবার ওই খাতে বিদেশি মুদ্রা খরচ হয়েছে বেশি। যার নিট ফল, দেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাওয়া। লগ্নিকারীদের মনে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। অবশ্য শেয়ার বাজারের পক্ষে ভাল খবর এটাই যে, বিদেশি লগ্নিকারীদের বিনিয়োগ বেড়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, ওই সব সংস্থা গত সোমবারই ভারতের বাজারে ৪,৯৮৪.৬০ কোটি টাকা লগ্নি করেছে।
অবশ্য আগামী কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে শেয়ার বাজারের হাল ফেরার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ধারণা, বাজেট পর্যন্ত বাজার দ্রুত ওঠা-নামা করবে। যদিও খুব বড় মাপের পতনের আশঙ্কা করছেন না তাঁরা। আর যেহেতু বাজেট পর্যন্ত বাজারের হাল এ রকম থাকার সম্ভাবনা, তাই সূচক নামার সুযোগে শেয়ার কিনে মুনাফার রাস্তা করে নেওয়াই লগ্নিকারীদের লক্ষ্য হবে বলে মনে করছে শেয়ার বাজার মহল।
সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই আশা, বাজেটের পরে শেয়ার সূচক নতুন দৌড় শুরু করতে পারে। কারণ তাঁদের ধারণা, বাজেটে আর্থিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব থাকতে পারে। আর বাস্তবে তা সত্যি হলে বাজার যে-তুমুল উৎসাহী হয়ে উঠবে, সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ আছে বলে তাঁরা মনে করেন না।
বিশেষত পরিকাঠামো এবং ব্যাঙ্কিং শেয়ার নিয়ে আশাবাদী অনেকেই। তার কারণ, আগামী ঋণনীতির পর্যালোচনায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমানোর জন্য কোনও পদক্ষেপ করলে ব্যাঙ্কের শেয়ারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
পাশাপাশি, ওই সব বিশেষজ্ঞের অভিমত, পরিকাঠমো উন্নয়ন নিয়ে কেন্দ্রের ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া গতি নেই। কারণ, ভারতে পরিষেবা শিল্পের ভাল অগ্রগতি হলেও উৎপাদন শিল্প থমকে রয়েছে। অথচ দেশের আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি আনতে উৎপাদন শিল্পের অগ্রগতি একান্ত জরুরি। আর তার জন্য পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উন্নয়ন নিশ্চিত করতেই হবে কেন্দ্রকে, মত বিশেষজ্ঞদের। যার রূপরেখা বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী রাখবেন বলেই তাঁদের ধারণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy