Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দুই শিশুর অভিভাবক কে, প্রশ্ন তুলে পুলিশে

আট মাস আগে সেই শিশুটি মারা যায়। আবাসিকদের অভিযোগ, দম্পতির গাফিলতিতেই যে ওই বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে, সে কথা প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া নিজেরাই তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন।

থানা থেকে বেরিয়ে আসছেন ওই দম্পতি। সোমবার, দমদমে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

থানা থেকে বেরিয়ে আসছেন ওই দম্পতি। সোমবার, দমদমে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০০:২২
Share: Save:

প্রৌঢ় দম্পতির দুই কন্যাসন্তানের ‘অভিভাবকত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন দক্ষিণ দমদমের অমরপল্লির লো-ল্যান্ড এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দারা। যার প্রেক্ষিতে পাল্টা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন ওই দম্পতি।

রবিবার রাতে আবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ওই দম্পতি তাতে যোগ দেননি। আলোচনায় কী ঠিক হয়েছে জানানোর জন্য তাঁদের ফ্ল্যাটে যান কয়েক জন আবাসিক। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, ওই দম্পতির কাছে দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। এক জনের বয়স ছ’মাস, অন্য জনের আড়াই মাস। আবাসনের এক বাসিন্দা শম্পা ভদ্রের অভিযোগ, আড়াই বছর আগে ওই দম্পতি এক কন্যাসন্তানকে দত্তক নিয়েছিলেন। আট মাস আগে সেই শিশুটি মারা যায়। আবাসিকদের অভিযোগ, দম্পতির গাফিলতিতেই যে ওই বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে, সে কথা প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া নিজেরাই তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন। এরই মধ্যে ফের ছ’মাস এবং আড়াই মাসের দু’টি বাচ্চার অভিভাবকত্ব কেন, সেই প্রশ্ন তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

শম্পাদেবীর কথায়, ‘‘ওই দম্পতি আমাদের জানিয়েছেন, ছ’মাসের শিশুকন্যাটিকে তাঁরা হরিদ্বারের এক দম্পতির কাছ থেকে এনেছেন। আড়াই মাসের মেয়েটিকে পেয়েছেন সারোগেসির মাধ্যমে। কিন্তু, এই সংক্রান্ত উপযুক্ত প্রমাণ তাঁরা কিছু দেখাতে পারেননি। উল্টে যা বলেছেন, তা বেশ সন্দেহজনক।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সোমবার সকালে দমদম থানার আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন ওই প্রৌঢ় দম্পতি। তাঁরা বলছেন, আবাসিকদের আচরণে তাঁরা মানসিক ভাবে ‘বিপর্যস্ত’। প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘প্রথম কন্যাসন্তান টেস্টটিউব বেবি ছিল। সে যখন হাসপাতালে ভর্তি, সেই শোকের মুহূর্তে স্ত্রী অংসলগ্ন ভাবে কিছু কথা বলেছিলেন। ওই সব প্রসঙ্গ টেনে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ প্রৌঢ় আরও জানান, বুকে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল মেয়েটি। তার চিকিৎসার জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখা হয়নি। কিন্তু সব চেষ্টা সত্ত্বেও বাচ্চাটিকে বাঁচানো যায়নি। এর পরে হরিদ্বারের এক দরিদ্র দম্পতির কাছ থেকে ছ’মাসের কন্যাসন্তানকে কলকাতায় আনেন তাঁরা। সেখানে কাগজপত্রের কোনও বিষয় ছিল না বলে জানিয়েছেন ওই দম্পতি।

প্রৌঢ়ার কথায়, ‘‘আমরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। আবাসনের জন্য এক হাজার টাকা দিতে চাইনি বলে যড়যন্ত্র করা হয়েছে। প্রথম মেয়ের মৃত্যু নিয়ে যে সব কথা শুনতে হয়েছে, তার পরে আমরা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। আট মাস আগে কেন আবাসিকেরা পুলিশের কাছে গেলেন না? এখন কেন এ সব কথা বলা হচ্ছে?’’

পুলিশ জানিয়েছে, তিন দিনের মধ্যে কন্যাসন্তানের অভিভাবকত্ব প্রমাণে প্রয়োজনীয় নথি জমা করার জন্য দম্পতিকে বলা হয়েছে। তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত ছ’মাস ও আড়াই মাসের দুই শিশুকন্যাকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির নির্দেশে একটি হোমে রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Guardianship South Dum Dum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE