সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাতেই গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে। প্রতীকী ছবি।
রাত সাড়ে ১১টা। স্টেথোস্কোপ গোঁজা অবস্থায় হাসপাতালের ভিতরে পড়িমরি ছুটছেন এক চিকিৎসক। তাঁর পিছনে দৌড়চ্ছেন তিন যুবক। ওয়ার্ডে ঢোকার কোল্যাপসিবল গেটের মুখে চিকিৎসকের কলার ধরে ফেললেন তিন জন। চিকিৎসককে মারতে ওই যুবকেরা এগিয়ে গেলে কোনও রকমে নিজেকে তাঁদের হাত থেকে ছাড়িয়ে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কাছে আশ্রয় নেন তিনি। পুলিশ ওই তিন জনকে ধরে নিয়ে যায় ফাঁড়িতে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাতেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ওই ঘটনা ঘটেছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, লিলুয়ার বাসিন্দা উকিল রায় (৩৬) সোমবার রাতে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন। তাঁর ভাই আগরওয়াল রায়, দুই বন্ধু সুতীর্থ বাগ এবং পরেশ সিংহকে নিয়ে দাদাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, রাতেই মৃত্যু হয় উকিলের।
জেরার মুখে ধৃতেরা তদন্তকারীর কাছে অভিযোগ জানান, উকিলকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হলেও তাঁর চিকিৎসা হচ্ছিল না। নার্স তাঁদের অনুরোধ মেনে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করছিলেন না। এ নিয়ে তাঁরা বারবার দৃষ্টি আর্কষণ করলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতের ডিউটিতে ছিলেন চিকিৎসক সৌম্যদীপ সাহা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই চিকিৎসক সাধ্যমতো চেষ্টা করেন পরিষেবা দেওয়ার। কিন্তু উকিলের মৃত্যুসংবাদ শুনে উত্তেজিত হয়ে ওই তিন যুবক সৌম্যদীপবাবুকে মারতে ছোটেন। ধৃত তিন জনের বাড়ি লিলুয়ায়। মঙ্গলবার ধৃতদের শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের আইনজীবী আদালতে জানান, মৃতের সৎকার করা হয়নি। তাই অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হোক। সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী আদালতে জানান,কর্মরত সরকারি চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। তাঁকে কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া উচিত হবে না। তবে একই সঙ্গে সরকারি কৌঁসুলি জানান, আদালত ধৃতদের শেষকৃত্যে যোগদানের জন্য
অনুমতি দিলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু শেষকৃত্যের পরে তাঁদের ফের জেলে ফিরে যেতে হবে। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করে আজ, বুধবার ধৃতদের জেল থেকে শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy