প্রতীকী ছবি।
রাতে আচমকাই দরজায় দুমদাম ধাক্কা। হুড়মুড়িয়ে উঠে দরজা খুলতেই পরিচিত চার যুবক জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। এর পরে হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে বছর পঞ্চান্নর এক বিধবা মহিলাকে তারা ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ ওই চার জনকেই গ্রেফতার করেছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নিমতা থানার কালীবাড়ি রোড এলাকায়। ওই ঘটনার পরে সামাজিক অসম্মানের ভয়ে প্রথমে চুপ থাকলেও গত ১১ ফেব্রুয়ারি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন ওই প্রৌঢ়া। সোমবার ব্যারাকপুর আদালতে ওই মহিলার গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম আরমান আলি, রবি মণ্ডল, আকাশ দাস ও নারায়ণ পাসোয়ান। প্রত্যেকেরই বয়স ১৯ থেকে ২৫-এর মধ্যে। চার জনই বাসের খালাসি হিসেবে কাজ করত। ধৃতদের এ দিন আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, আদতে হাড়োয়া থানার বোনতোসা গ্রামের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়া দীর্ঘদিন ধরেই কালীবাড়ি রোডের ২০১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ভাতের হোটেল চালান। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি ওই হোটেলেই থাকেন। বাসচালক ও কর্মীদের অনেকেই ওই হোটেলে খাওয়াদাওয়া করেন। অভিযোগ, গত শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ ওই চার যুবক হোটেলে এসে বসে। কিন্তু কোনও খাবারের অর্ডার দেয় না। প্রৌঢ়া জানান, বারবার জানতে চাইলেও কেউ কোনও কথার উত্তর না দিয়ে নিজেদের মধ্যে চাপা স্বরে কথা বলতে থাকে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও কথার উত্তর না দেওয়ায় আমিও আর কিছু জিজ্ঞাসা করিনি। কিছু ক্ষণ পরে অবশ্য চার জনই বেরিয়ে যায়।’’ ওই চার জন মাঝেমধ্যেই প্রৌঢ়ার হোটেলে দিনে কিংবা রাতে খেতে আসত।
এর পরে রাত ১২টা নাগাদ হোটেলের ঘর সাফ করে ভিতরেই শুয়ে পড়েন ওই প্রৌঢ়া। রাত দুটো নাগাদ দরজায় জোরে ধাক্কা দেওয়ার আওয়াজ শুনে উঠে পড়েন তিনি। তাঁর দাবি, কে ধাক্কা মারছে, বারবার তা জানতে চাইলেও কেউ কোনও সাড়া দেয়নি। শেষে তিনি দরজা খুলতেই ওই চার জন জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়ে। অভিযোগ, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই প্রৌঢ়াকে দু’জন চেপে ধরে। আর অন্যেরা গামছা দিয়ে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে। তিনি চিৎকার শুরু করলে তাঁর মুখে একটা কাপড় গুঁজে দিয়ে তাঁকে পরপর ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ঘণ্টাখানেক পরে চার জন হোটেল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে প্রৌঢ়ার হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয়।
প্রৌঢ়া পুলিশকে জানিয়েছেন, এর পরে সারা রাত তিনি যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন। শনিবার সকালে বাসস্ট্যান্ডের কয়েক জনকে বিষয়টি জানান তিনি। কিন্তু লজ্জায় কোনও আত্মীয়কে কিছু বলতে পারেননি। তবে স্থানীয় কয়েক জন বিষয়টি জানার পরেই ওই প্রৌঢ়াকে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। প্রৌঢ়া বলেন, ‘‘আমি লেখাপড়া জানি না। তাই পুলিশের কাছে গিয়ে সব বলতে তাঁরাই অভিযোগ লিখে দেন।’’ ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার রাজেশকুমার সিংহ বলেন, ‘‘খুবই বাজে ঘটনা। অভিযোগ পেয়েই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy