Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রবেশিকায় শেষ কথা ভর্তি কমিটি

গত ভর্তির মরসুমে প্রবেশিকা পরীক্ষা ঘিরে চূড়ান্ত বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ, মেধা-তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ প্রবেশিকা থেকে নেওয়া হোক, বাকি ৫০ শতাংশ নেওয়া হোক স্কুল স্তরের সর্বশেষ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর থেকে।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ, মেধা-তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ প্রবেশিকা থেকে নেওয়া হোক, বাকি ৫০ শতাংশ নেওয়া হোক স্কুল স্তরের সর্বশেষ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪০
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে ভর্তির পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়ার পিছনে পরীক্ষকেরা যে-যুক্তি দেখিয়েছিলেন, তদন্ত কমিটি তা নস্যাৎ করে দিয়েছে। তাদের অভিমত, যদি প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়, তা হলে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ভর্তি কমিটি। কী ভাবে ভর্তি নেওয়া হবে, সেই ব্যাপারে ভর্তি কমিটিই পরামর্শ দিতে পারে কর্মসমিতিকে।

গত ভর্তির মরসুমে প্রবেশিকা পরীক্ষা ঘিরে চূড়ান্ত বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রবেশিকা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েও ছাত্র আন্দোলনের জেরে তা ফিরিয়ে আনা হয়। বারবার দিন বদল করে শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয় ভর্তি-পরীক্ষা। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি যুক্তি দেখিয়েছিলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে প্রবেশিকার কোনও উল্লেখ নেই। কিন্তু তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিউট বা বিধি উল্লেখ করে ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মত দিয়েছে।

ইতিহাসের ভর্তি-পরীক্ষায় ফল-বিভ্রাটের অভিযোগ ওঠার পরে মেধা-তালিকায় দেখা যায়, উচ্চ মাধ্যমিকে ৮৫%-৯০% নম্বর পেয়েও কেউ কেউ প্রবেশিকায় পেয়েছেন শূন্য, কেউ পেয়েছেন এক! তার পরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের দিয়ে উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করানো হয়। তাতে দেখা যায়, নম্বর বেড়েছে অনেকেরই। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বর্তমান গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ এবং প্রাক্তন বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়। সেই কমিটির রিপোর্ট সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইতিহাসের পরীক্ষকেরা যুক্তি দেখিয়েছিলেন, যে-সব পরীক্ষার্থীর উত্তরে স্বাধীন চিন্তার ছাপ পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় বলেই তদন্ত কমিটির অভিমত।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তার পরে বহিরাগত পরীক্ষকদের দিয়ে ইতিহাসের সব উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করানো হয়। তাতে এক-এক জন পরীক্ষার্থীর প্রচুর নম্বর বেড়েছিল। তদন্ত রিপোর্টে তার উল্লেখ করা হয়েছে। ওই কমিটির বক্তব্য, যাদবপুরের পরীক্ষকেরা পড়ুয়ার মেধা যাচাই করতে পারছেন, অথচ বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষকেরা পারছেন না— এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। তবে খাতা দেখার ক্ষেত্রে ইতিহাস বিভাগের পরীক্ষকদের কোনও খারাপ অভিসন্ধি ছিল না বলেই মনে হয়েছে তদন্ত কমিটির।

তাদের মতে, প্রশ্নপত্র তৈরিতেও কোনও ভুল ছিল না। অন্য যে-পাঁচটি বিষয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, তার কোনওটিতে গলদ চোখে পড়েনি তদন্ত কমিটির।

ইতিহাসের প্রবেশিকার পুরো প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখে তদন্ত কমিটির সুপারিশ, আগামী ভর্তি-পরীক্ষার জন্য বিভাগীয় পরীক্ষকদের দু’ভাগে ভাগ করে উত্তরপত্র যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হোক। এক দল পরীক্ষক খাতা দেখার পরে একই খাতা অন্য দলের পরীক্ষক দিয়ে যাচাই করানো হোক। যদি দেখা যায়, দু’দল পরীক্ষকের দেওয়া নম্বরের মধ্যে ফারাক ১০ বা তার বেশি, তা হলে বাইরের পরীক্ষক দিয়ে তৃতীয় বার সেই খাতার মূল্যায়ন করানো হোক। তদন্ত কমিটির সুপারিশ, মেধা-তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ প্রবেশিকা থেকে নেওয়া হোক, বাকি ৫০ শতাংশ নেওয়া হোক স্কুল স্তরের সর্বশেষ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jadavpur University Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE