Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তার বললেন, কানের পর্দা ফেটে গিয়েছে!

শব্দবাজি নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। কিন্তু তা থেকে যে এমন হতে পারে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সহেল পল্যে
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৫৩
Share: Save:

কানে চড় মারলে যেমন হয়, হঠাৎ তেমনটা হল। একটা শোঁ-শোঁ আওয়াজ, আর সঙ্গে সঙ্গে যেন কান বন্ধ হয়ে গেল। বাঁ কানটা চেপে ধরে রাস্তার উপরেই বসে পড়েছিলাম। তখনই বুঝেছি, কিছু একটা বড়সড় গোলমাল হয়েছে। কিছুটা পিছনেই ছিলেন বাবা। তাড়াতাড়ি এসে আমাকে ধরলেন। বললাম, ‘‘কানে একটা ভোঁ-ভোঁ আওয়াজ হচ্ছে। কিছু শুনতে পাচ্ছি না!’’

শব্দবাজি নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। কিন্তু তা থেকে যে এমন হতে পারে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। সোমবার, কালীপুজোর পরের দিন এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিমন্ত্রণ খেয়ে আন্দুলের ধূলিয়ার বাড়িতে ফিরছিলাম। তখন রাত সওয়া ১০টা হবে। সঙ্গে ছিলেন বাবাও। দূর থেকে দেখতে পেয়েছিলাম, রাস্তায় জনা কয়েক ছেলে টানা শব্দবাজি ফাটিয়ে যাচ্ছে। তা দেখেই রাস্তার এক ধার ঘেঁষে হাঁটছিলাম। তখন একটা ফোন এল। ফোনে কথা বলতে-বলতেই বাজি ফাটানোর জায়গাটায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। হঠাৎই মনে হল, বাঁ কানের পাশে কিছু একটা এসে পড়ল। সেই সঙ্গে তীব্র একটা আওয়াজ! কানে ভোঁ ধরে গেল। কান চেপে বসে পড়লাম রাস্তায়। পিছন থেকে দৌড়ে এলেন বাবা। বুঝলাম, ওই ছেলেগুলোর বাজিরই একটা বাঁ কানের পাশে এসে পড়েছে। তখন শুধু কানই নয়, গালটাও জ্বালা-জ্বালা করছে। দেখলাম, কানের পাশের দাড়ি পুড়ে গিয়েছে। ঠোঁটেও চোট লেগেছে। কিন্তু সব চেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে কানে। বাবা বলল, এত রাতে তো আর ডাক্তার পাওয়া যাবে না। তাই সারারাত ও ভাবেই কাটল।

পরের দিন স্থানীয় এক ডাক্তারের কাছে গেলাম। তিনি কলকাতার ইএনটি ডাক্তারের কাছে যেতে বললেন। সেই ডাক্তার বললেন, কানের পাশে বাজি ফাটার কারণে বাঁ কানের পর্দা ফেটে গিয়েছে। এক মাসের খাওয়ার ওষুধ দিয়েছেন। তার পরে বোঝা যাবে, কানের পর্দা জোড়া লাগবে, না কি অস্ত্রোপচার করতে হবে।

এত দিন শব্দবাজির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে শুনেছি, পড়েছি। খুব একটা গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু যা ঘটল, তাতে এখন বুঝেছি যে, শব্দবাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। না হলে এই ভোগান্তি চলবেই। এই যে কানের পর্দা নিয়ে অনিশ্চয়তা, সেটা তো শব্দবাজির কারণেই হল। আমার মতো হয়তো অনেকেই আছেন, যাঁরা নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝতে পারছেন বা পেরেছেন যে, শব্দবাজি কতটা ক্ষতিকারক!

এক মাস পরে কানের পর্দার কী অবস্থা বুঝতে পারব। কিন্তু ইতিমধ্যে এটা বুঝে গিয়েছি যে, শব্দবাজিতে না বলার সময় কিন্তু এসে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Firecracker আতসবাজি Ear Drum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE