এই টিনের ছাউনির কারণেই ভিতরে ঢুকতে বাধা পায় দমকল। নিজস্ব চিত্র
জীবনসুধায় আগুন নেভাতে ‘খলনায়ক’ গাড়ি রাখার ছাউনি!
বৃহস্পতিবার সকালে জওহরলাল নেহরু রোডের জীবনসুধা ভবনে আগুনের খবর পাওয়ার মিনিট দশেকের মধ্যেই পৌঁছে যায় দমকল বাহিনী। কিন্তু তার পরেও তাদের কাজ শুরু করতে আধ ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। এই দেরির জেরে বাড়তে থাকে আগুনের দাপট।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বহুতলের ‘আউট গেট’ দিয়ে কিছুটা ঢোকার পরেই আটকে পড়ে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। কারণ, দক্ষিণ দিকের রাস্তায় গাড়ি রাখার জন্য টিন এবং লোহা দিয়ে তৈরি ছাউনি! দমকলের হাতে ‘ব্রন্ট স্কাই লিফট’ বা হাইড্রলিক ল্যাডার মজুত থাকা সত্ত্বেও সেগুলি প্রথমে ঢোকানোই যায়নি ওই ছাউনি পথ আটকে থাকায়। শেষমেশ ওই ছাউনি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন পুলিশ ও দমকলের অফিসারেরা। শেক্সপিয়র সরণি থানার অফিসারদের সাহায্য নিয়ে দমকলকর্মীরা ছাউনির টিন কাটা শুরু করেন। আধ ঘণ্টা ধরে ছাউনি কাটার পরে ভাঙা অংশ সরিয়ে একটি হাইড্রলিক ল্যাডার ভিতরে ঢোকানো হয়। তার পরে শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ।
দমকল কর্মীরা জানান, আধ ঘণ্টা দেরির জন্য সতেরো তলা থেকে মুহূর্তে আঠেরো এবং উনিশ তলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। তার উপরে এ দিন দুপুরে হাওয়ার বেগও বেশি ছিল। যার ফলে আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়েছে।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, জীবনসুধা ভবনের ওই অংশে কেন ছাউনি করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুধু ছাউনি থাকার কারণে ওই বহুতলের চার দিকে ফাঁকা জায়গা থাকা সত্ত্বেও এ দিন দমকলের গাড়ি সরাসরি ঢুকতে পারেনি। কার অনুমতি নিয়ে ছাউনি তৈরি করা হয়েছিল, তা জানতে চাওয়া হবে জীবনসুধা ভবনের প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত অফিসারদের সঙ্গে। কাজে বাধা পাওয়ার জন্য ওই ভবন কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চাইতে পারেন দমকল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ জানায়, আগুন লাগার কারণে গোটা অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে সিঁড়ি দিয়েই দমকল ও শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশকর্মীরা ১৭ তলায় পৌঁছন। পাশাপাশি, দমকলের অন্য একটি দল ওই বহুতলের নিজস্ব জলাধারের সঙ্গে হোসপাইপ জুড়ে উপরে উঠেন। তার পরে জল ঢালা শুরু হয়।
দমকলের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই অফিস ভবনে আগুন নেভানোর কী কী ব্যবস্থা ছিল, সেগুলি পর্যাপ্ত ছিল কি না, দাহ্য কিছু মজুত রাখা ছিল কি না— সব কিছুই দীপাবলির ছুটি শেষ হওয়ার পরে খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy