পড়ুয়া থেকে অভিভাবক, সকলের জন্য জিম। কোনও বেসরকারি স্কুলে নয়। এ শহরের একটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বাংলা মাধ্যম স্কুল এমনই পদক্ষেপ করতে উদ্যোগী হয়েছে।
সেই স্কুল, কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠে এক সময়ে পড়ুয়া সংখ্যা ঠেকেছিল তলানিতে। কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক কাজি মাসুম আখতার আসার পরে ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে ছবিটা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পিয়ালীতে গিয়ে রীতিমতো প্রচার চালিয়ে পড়ুয়াদের এই স্কুলে ভর্তি করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন শিক্ষকেরা। যার ফলে এখন পড়ুয়ার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রধান শিক্ষক জানালেন, এখানে যারা পড়তে আসে তারা কেউ রিকশাচালকের সন্তান, কারও মা পরিচারিকার কাজ করেন। স্কুলের প্রতি তাদের যাতে আগ্রহ গড়ে ওঠে, সে জন্যই গত দু’বছর ধরে পঠনপাঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন জিম।
প্রধান শিক্ষক আরও জানিয়েছেন, শহুরে স্কুলে খেলার জন্য নিজস্ব বড় মাঠ নেই। তাই পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যচর্চার কথা মাথায় রেখেই জিম চালুর সিদ্ধান্ত। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি এখানে স্বাস্থ্যচর্চা করতে পারবেন অভিভাবকেরাও। বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে আবেদন করায় তিনি জানিয়েছিলেন, জিমন্যাসিয়ামের জন্য ঘর তৈরি করতে পারলে সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে দেবেন। ঘর প্রস্তুত করে মন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়াও স্কুল চত্বরে গাছের চারা বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের। সেগুলির পরিচর্যাও করবে তারা। সম্প্রতি ‘নির্মল বিদ্যালয় অভিযান, ২০১৮’র পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলে সবুজ পরিবেশ তৈরি এবং স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হিন্দু স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি সামন্ত। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত তুষারবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে স্কুলে, তার পরে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া। এখনকার পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যচর্চার সময় সত্যিই কম। এমন উদ্যোগ নিলে স্কুল চলাকালীনই পড়ুয়ারা তা করার সময় পায়। পাশাপাশি অভিভাবকদের স্বাস্থ্যচর্চার সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টাও প্রশংসনীয়।’’
পড়ুয়ার অভাবে যে স্কুল এক সময়ে প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল, সেখানে জিমনাশিয়াম তৈরি ছাড়াও বসছে সৌর প্যানেল ও সিসি ক্যামেরা। প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, এই দু’টি কাজেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy