ঘটনার পরে লন্ডভন্ড ঘর। মঙ্গলবার, বাঁশদ্রোণীতে। নিজস্ব চিত্র
আলমারি খুলে লুটপাট চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে এই দৃশ্য থেকে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন পেশায় আইনজীবী এক মহিলা। দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে গিয়ে তাদের হাতে নিগৃহীত হলেন তিনি। মঙ্গলবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটেছে নেতাজিনগর থানার বাঁশদ্রোণী সুপার মার্কেটের কাছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমিতা রায়চৌধুরী নামে বছর ছাপান্নের ওই আইনজীবী বাঁশদ্রোণী সুপার মার্কেটের কাছে এনএসসি বসু রোডের একটি চারতলা ফ্ল্যাটের তিনতলায় একাই থাকেন। সুমিতা বলেন, ‘‘রোজকার মতোই আদালতের কাজকর্ম সেরে পৌনে পাঁচটা নাগাদ বাড়ি ফিরি। তিনতলায় আমার ফ্ল্যাটের সামনে এসে দেখি, বাইরে গ্রিলের দরজার তালা ভাঙা। শুধু তা-ই নয়, গ্রিলের দরজার ভিতরে যে দরজা আছে, তার তালাও ভাঙা। আমি অবাক হয়ে যাই।’’ সুমিতা জানান, দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকেই তিনি বুঝতে পারেন, কারা যেন ফিসফিস করে
হিন্দিতে কথা বলছে। সুমিতা দেখেন, তাঁর ফ্ল্যাটের ডান দিকের শোয়ার ঘর লন্ডভন্ড হয়ে রয়েছে। আলমারির জামাকাপড় থেকে বইপত্র— সবই ছড়িয়ে রয়েছে। বাঁ দিকের ঘরে গিয়ে দেখেন, দুই যুবক তাঁর লোহার আলমারি খুলে জিনিসপত্র নামাচ্ছে।
সুমিতা বুঝতে পারেন, বাড়িতে চুরি হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে যান তিনি। সুমিতা বলেন, ‘‘দুই দুষ্কৃতীর এক জনের বয়স ২৩ থেকে ২৫-এর মধ্যে। অন্য জনের বছর চল্লিশ। আমি অল্পবয়সীর হাত ধরে হেঁচকা টান মারি। তা দেখে অন্য জন একটি লোহার রড দিয়ে আমার কণ্ঠনালী চেপে ধরে। আমি হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যাই। ওরা পালিয়ে যায়।’’
এর পরে সুমিতার চিৎকারে জড়ো হয়ে যান আশপাশের প্রতিবেশীরা। কিন্তু তত ক্ষণে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গিয়েছে। সুমিতার প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ নাইডু বলেন, ‘‘আমরা নেতাজিনগর থানায় ফোন করে সব জানাই। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ আসে।’’ ভরা বিকেলে এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা।
সুমিতা যে ফ্ল্যাটে থাকেন, সেখানে আগে নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও এখন কেউ ছিলেন না।
ওই বাড়িটির প্রতিটি তলে চারটি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য ফ্ল্যাটের লোকজন জানিয়েছেন, তালা ভাঙার কোনও আওয়াজ তাঁরা পাননি। ওই এলাকার এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘আমরাও তো অনেক সময়ে বাড়ি ফাঁকা রেখে বেরোই। এই ঘটনার পরে কোথাও যেতে তো রীতিমতো ভয় করবে।’’ নেতাজিনগর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। রাস্তায় থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীরা কোন দিক থেকে এসেছিল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। ডিসি (এসএসডি) সন্তোষ নিম্বলকরকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy