Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নাকের ডগায় প্লাস্টিক দূষণ, চুপ প্রশাসন!

শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করে আনা ব্যবহৃত প্লাস্টিক বা প্লাস্টিকের বস্তার কিছু পরিমাণ জমা হয় কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির পিছনে সর্বমঙ্গলা ঘাটে। পুরসভার ছ'নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই এলাকায় প্লাস্টিক ধোয়া, বাছাই এবং তা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করতে প্রক্রিয়াকরণ সবই চলে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

দূষণ: (বাঁ-দিকে) নোংরা প্লাস্টিক ধোয়া হচ্ছে গঙ্গায়। সার সার শুকোচ্ছে প্লাস্টিক। সর্বমঙ্গলা ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

দূষণ: (বাঁ-দিকে) নোংরা প্লাস্টিক ধোয়া হচ্ছে গঙ্গায়। সার সার শুকোচ্ছে প্লাস্টিক। সর্বমঙ্গলা ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

দীক্ষা ভুঁইয়া
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

কাউন্সিলর জানেন। পুলিশও জানে। কিন্তু কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ কিংবা পুর কর্তৃপক্ষ কারও নজরেই নেই যে দীর্ঘ বছর ধরে গঙ্গার পাড়ে বসতি এলাকায় চলছে প্লাস্টিক তৈরির কারখানা!

শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করে আনা ব্যবহৃত প্লাস্টিক বা প্লাস্টিকের বস্তার কিছু পরিমাণ জমা হয় কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির পিছনে সর্বমঙ্গলা ঘাটে। পুরসভার ছ'নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই এলাকায় প্লাস্টিক ধোয়া, বাছাই এবং তা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করতে প্রক্রিয়াকরণ সবই চলে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বছরের পর বছর ধরে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা নোংরা প্লাস্টিক ধোয়া হচ্ছে গঙ্গায়। পাড়েই তা শুকোনো হচ্ছে। এর পরে তা ঢুকে যাচ্ছে পাশের কারখানাগুলিতে। সেখানেই পরপর চলে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের প্রক্রিয়াকরণ। কোনও কারখানায় নির্দিষ্ট মাপে প্লাস্টিক ছাঁটা হচ্ছে, কোথাও সেই প্লাস্টিক গলিয়ে হচ্ছে দানা। কোনও কারখানায় প্লাস্টিকের দানাগুলি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গলিয়ে ব্যাগ এবং ত্রিপল তৈরি হচ্ছে। প্লাস্টিক গলানোর সময়ে পোড়া গন্ধে ভরে ওঠে এলাকা। সামনেই রয়েছে জ্যোতিনগর বস্তি। যেখানে কয়েক হাজার মানুষের বাস।

অথচ মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার জানাচ্ছেন, শহরের ভিতরে কোনও প্লাস্টিক তৈরির কারখানাকে পুরসভা ট্রেড লাইসেন্সই দেয়নি! তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা জানেই না এমন কারখানার অস্তিত্ব।’’ ফলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্ধারিত নিয়ম ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে নির্বিঘ্নে এই সব কারখানা চলছে বলে অভিযোগ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কী ভাবে? প্রশ্ন শুনেই একটি কারখানার মালিক ভিতরে ঢুকে যান। অন্য এক মালিক গেট বন্ধ করে দেন। একটি কারখানার ফোন নম্বরে পরে যোগাযোগ করা হলে মালিক জানিয়ে দেন, ‘‘কোনও প্লাস্টিকের কারবারই তাঁদের নেই!’’

মেয়র পারিষদ না জানলেও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুমন সিংহ এই অনুমোদনহীন কারবারের কথা জানেন বলে স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কাউন্সিলর হওয়ার অনেক আগে থেকেই কারখানাগুলি চলছে।’’ কাউন্সিলর হওয়ার পরে সেগুলি বন্ধ করতে কী পদক্ষেপ করেছেন? পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন? কোনও উত্তর মেলেনি তাঁর থেকে।

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘এখানে কিন্তু দু’ভাবে দূষণ হচ্ছে। গঙ্গায় প্লাস্টিক ধোয়া এবং প্লাস্টিক পোড়ানোর জন্য পরিবেশের ভয়ঙ্কর ক্ষতি হচ্ছে।’’ কী করছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ? এ প্রসঙ্গে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অধিকর্তা কল্যাণ রুদ্রকে বারবার ফোন এবং মেসেজ করেও উত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE