Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বসতিতে পুড়ছে প্লাস্টিক, নিরুত্তাপ প্রশাসন

বিধাননগর স্টেশন থেকে কাঁকুড়গাছি মোড় পর্যন্ত রেললাইনের দু’ধার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। বস্তি ও বহুতল দুইই রয়েছে সেখানে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকেই কুড়িয়ে আনা প্লাস্টিক স্তূপ করে রাখা হয় সেখানে। পরে তা গলিয়ে প্লাস্টিকের দানা বা অন্য জিনিস হয়।

লঙ্ঘন: এলাকায় প্লাস্টিকের স্তূপ।—নিজস্ব চিত্র।

লঙ্ঘন: এলাকায় প্লাস্টিকের স্তূপ।—নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০৩:০২
Share: Save:

মাঝেমধ্যেই প্রবল শ্বাসকষ্ট আর কাশি হচ্ছে। এর জেরে রাতবিরেতে ঘুম ভাঙছে উল্টোডাঙার বাসিন্দাদের।

অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই এলাকায় রমরমিয়ে চলে প্লাস্টিকের ব্যবসা। নানা এলাকা থেকে প্লাস্টিকের জিনিস কিনে স্তূপ করে রাখা হয় সেখানে। পরিবেশ আইন না মেনে সেখানেই তা গলিয়ে ফেলা হচ্ছে।

অবস্থা এমনই যে, সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ পুর-প্রশাসন দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। ৬ জুন পুরসভার তিন নম্বর বরোর তরফে পর্ষদকে দেওয়া ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যাপক অর্থে পরিবেশ আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন’। পুর প্রতিনিধি এবং স্থানীয়দের অভিযোগ, তা-ও অবস্থা বদলায়নি। পর্ষদকে কাঠগড়ায় তুলে তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘তাহলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কী কাজ?’ পর্ষদের এক অফিসার জানাচ্ছেন, চিঠি পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে লেখা সেই চিঠির অংশ।

বিধাননগর স্টেশন থেকে কাঁকুড়গাছি মোড় পর্যন্ত রেললাইনের দু’ধার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। বস্তি ও বহুতল দুইই রয়েছে সেখানে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকেই কুড়িয়ে আনা প্লাস্টিক স্তূপ করে রাখা হয় সেখানে। পরে তা গলিয়ে প্লাস্টিকের দানা বা অন্য জিনিস হয়।

এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘শহরের প্লাস্টিক-হাব হয়ে উঠেছে এই এলাকা। ঘন জনবসতির মধ্যেই প্লাস্টিক গলিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। তার পোড়া গন্ধে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে।’’ সম্প্রতি মানিকতলা থানায় অভিযোগ করেন এক বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘‘তাতেও কাজ হয়নি। কোনও ভাবেই এ কাজে রাশ টানা যাচ্ছে না।’’

স্থানীয় কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমি নিরুপায়। কিছু করতে পারছি না। তাই বরোর বৈঠকে বিষয়টি তুলেছিলাম। তার পরেই দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও স্থানীয় একটি কারখানায় তামার তার গলানো হয়। তখন তারের গায়ের প্লাস্টিকও পোড়ে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সেখান থেকে বৃষ্টির জলের সঙ্গে লোহার ছাট বেরিয়ে নর্দমা আটকে দেয়। এর জেরে মানিকতলা মেন রোডে জল জমে যায়।’’

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও চিঠি পাইনি। এই সব কারখানাকে তো পুরসভার লাইসেন্সই দেওয়ার কথা নয়।’’ পর্ষদ নিজে কেন উদ্যোগী হচ্ছে না? তবে কি তারা দায় এড়াচ্ছে? সে উত্তর পাওয়া যায়নি কল্যাণবাবুর থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE