শহরে নতুন দু’টি মেট্রো স্টেশন নির্মাণের জন্য কাটা পড়বে ৩০০টি গাছ। যার বদলে লাগাতে হবে দেড় হাজার চারা। বন দফতর এবং কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) সূত্রে খবর, দেড় হাজার চারা লাগাতে অন্তত সাড়ে সাত বিঘা জমির প্রয়োজন। যা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কার্জন পার্কে ধর্মতলা এবং লালদীঘি সংলগ্ন এলাকায় মহাকরণ মেট্রো স্টেশন নির্মাণের কাজ নিয়ে নতুন করে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে কেএমআরসিএল। সংস্থার চিফ ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার, পুরসভা, পরিবহণ এবং বন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সমস্যা মেটানো হবে।’’
নিয়ম হচ্ছে উন্নয়নের কাজের জন্য কোথাও একটা গাছ কাটতে হলে তার বদলে পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে প্রকল্পের কাজে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে। অর্থাৎ, এই ক্ষেত্রে ৩০০ গাছের বদলে নতুন করে দেড় হাজার চারা লাগাতে হবে। বন দফতরের আধিকারিকেরা জানান, ৩ মিটার ব্যবধানে একটি করে চারা লাগালে দেড় হাজার চারার জন্য অন্তত সাড়ে ৭ বিঘা জমির প্রয়োজন।
বন দফতর সূত্রে খবর, এরই মধ্যে বেশ কয়েক বার কার্জন পার্কে ধর্মতলা এবং লালদীঘি সংলগ্ন এলাকায় মহাকরণ মেট্রো স্টেশন যে জায়গায় হওয়ার কথা সেই জায়াগা পরিদর্শন করেছেন দফতরের আধিকারিকেরা। কোন কোন গাছ কাটা পড়বে, তা-ও চিহ্নিত করা হয়েছে প্রাথমিক ভাবে। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিবেশ আইনের কাছে আমাদের হাত-পা বাধা। তাই নতুন চারা লাগানোর জমি চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাউকেই কাজ শুরুর অনুমতি দিতে পারি না।’’
কেএমআরসিএল সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজের জন্য সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া পর্যন্ত এখনই ৮০০ গাছ কাটা পড়েছে। সংস্থার কর্তাদের দাবি, তার বদলে কেএমআরসিএল ৪২০০টি চারা লাগিয়েছে। তবে এই নতুন দেড় হাজার চারা কোথায় লাগানো হবে বা তার জমি কোথায় মিলবে, সে বিষয়ে কোনও উত্তর দিতে পারেননি সংস্থার কর্তারা। সংস্থার তরফে বিশ্বনাথ দেওয়ানজি শুধু বলেন, ‘‘জমির খোঁজ অবশ্যই মিলবে।
আমরা আশাবাদী।’’
তবে ১৫০০ চারা পোঁতার জন্য শহরে বা শহর সংলগ্ন এলাকার কোথায় সাড়ে সাত বিঘা জমি মিলবে, তা নিয়ে সন্দিহান বন দফরের আধিকারিকেরাও। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা আমাদের জমি চিহ্নিত করে জানালে এবং সেই জায়গায় চারা পোঁতা শুরু করলে আমরা কাজ শুরুর অনুমতি দিই। তার আগে পর্যন্ত কাজ শুরুর ছাড়পত্র পাওয়া যায় না।’’
কেএমআরসিএল যদি জমির ব্যবস্থা করতে না পারে, তা হলে কি নতুন দুই মেট্রো স্টেশন নির্মাণ শুরুর ছাড়পত্র মিলবে না বন দফতরের থেকে? বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, ‘‘খোঁজ নেব। সুরাহার পথ তো বার করতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy