Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মেয়র এসে দেখে গেলেন, তবে নামানো হল হোর্ডিং 

শনিবার সন্ধ্যায় হোর্ডিং-হটানোর অভিযান শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত অবশ্য সেগুলিতে ঢাকাই পড়ে থাকল ট্র্যাফিক সিগন্যাল, রাস্তার মোড়ের পুলিশের স্ট্যান্ড এবং ত্রিফলা বাতি। স্থানীয়েরা পথ পেরোলেন বিপজ্জনক ভাবেই।

আগে-পরে: হোর্ডিংয়ে এ ভাবেই ঢাকা পড়ে গিয়েছিল ট্র্যাফিক পুলিশের স্ট্যান্ড (বাঁ দিকে)। শনিবার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সেটি। উত্তর কলকাতার রাজবল্লভপাড়ায়। ছবি: সুমন বল্লভ

আগে-পরে: হোর্ডিংয়ে এ ভাবেই ঢাকা পড়ে গিয়েছিল ট্র্যাফিক পুলিশের স্ট্যান্ড (বাঁ দিকে)। শনিবার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সেটি। উত্তর কলকাতার রাজবল্লভপাড়ায়। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

মেয়র গেলেন, ঘুরে দেখলেন, তবে খোলা হল উত্তর কলকাতার রাজবল্লভপাড়ার বিতর্কিত হোর্ডিং।

শনিবার সন্ধ্যায় হোর্ডিং-হটানোর অভিযান শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত অবশ্য সেগুলিতে ঢাকাই পড়ে থাকল ট্র্যাফিক সিগন্যাল, রাস্তার মোড়ের পুলিশের স্ট্যান্ড এবং ত্রিফলা বাতি। স্থানীয়েরা পথ পেরোলেন বিপজ্জনক ভাবেই। এলাকার কাউন্সিলর পার্থ মিত্র অবশ্য সকালেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাগবাজার এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে এ দিন যোগ দিতে যাওয়ার কথা ছিল নবনিযুক্ত মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। তিনি ঘুরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত হোর্ডিংগুলি খোলা সম্ভব নয় বলে জানানো হল। কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘পাড়ায় আজ মেয়র আসছেন। তার আগে কি তাঁর ছবি সরিয়ে দেওয়া যায়? আজকের দিনটা থাকুক। কাল সরাব!’’ অর্থাৎ, মেয়রের কাছে মুখ রাখতে মেয়রের মুখের ছবি লাগানো হোর্ডিং সরানো যাবে না। তা সেই সব হোর্ডিংয়ে যতই ট্র্যাফিক পুলিশের স্ট্যান্ড এবং সিগন্যাল ঢাকা পড়ে থাক না কেন! পরে অবশ্য সন্ধ্যায় দলবল নিয়ে গিয়ে সেই সব হোর্ডিং খুলিয়ে দেন কাউন্সিলরই। এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর বলেন, ‘‘সমস্যা হচ্ছে বুঝেই খুলে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’

শোভন চট্টোপাধ্যায় মেয়র পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে পুরসভায় বেশ কিছু রদবদল হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং নবনিযুক্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় উত্তর কলকাতা তৃণমূলের তরফে। শোভাবাজার, রাজবল্লভপাড়া, শ্যামবাজার এলাকায় নবনিযুক্তদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশাল বিশাল হোর্ডিং বসিয়েছিলেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ মিত্র। সেগুলির কোনওটির উচ্চতা মাটি থেকে ২০ ফুটের কাছাকাছি। সেগুলির বেশ কয়েকটিতে রাজবল্লভপাড়া এলাকায় ট্র্যাফিক সিগন্যাল ঢেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। একটি ট্র্যাফিক স্ট্যান্ড আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগানো ব্যানারে ঢাকা পড়ে বলে অভিযোগ। বিতর্কের মধ্যে পুলিশও হোর্ডিংগুলি খুলে নিতে বলে কাউন্সিলরকে। তবু মেয়র ঘুরে যাওয়া পর্যন্ত সেগুলি খোলা হয়নি।

এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে পার্থবাবুর যুক্তি ছিল, ‘‘ওই ট্র্যাফিক স্ট্যান্ডটিতে এমনিতেও পুলিশ দাঁড়ায় না। তবু পুলিশকে বলেছিলাম, খুলে ফেলব। করে দিয়েছি।’’ কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠ এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, মেয়র এ দিন চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে অনুষ্ঠান-স্থলে পৌঁছেছেন। মেয়রের চলার পথেই দু’ধারে লাগানো ছিল তাঁর ছবি-সহ বিশাল বিশাল হোর্ডিং। ওই বাসিন্দার কথায়, ‘‘রাস্তায় নিজের ছবি দেখতে কার না ভাল লাগে? মেয়রেরও কথা ভেবেই দাদা প্রথমে হোর্ডিংগুলি রেখে দিয়েছিলেন।’’

এক স্থানীয় বাসিন্দা অবশ্য বলছেন, ‘‘প্রথমে মনে হচ্ছিল মেয়রই মুখ্য, পথচারীদের নিরাপত্তা গৌণ। দেরিতে হলেও বোধদয় যে হয়েছে, তা দেখে ভাল লাগছে।’’

বিষয়টি নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কোথায় এ রকম হয়েছে, আমার চোখে পড়েনি। যদি এখনও কয়েকটি সরানো না হয়ে থাকে, তবে অবিলম্বে সরিয়ে দিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE