Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কারের পরে জল ভরা শুরু টালার প্রকোষ্ঠে

পুরসভা সূত্রের খবর, ১৯১১ সালে পলতা থেকে গঙ্গার জল শোধন করে রাখার জন্য তৈরি হয় টালা ট্যাঙ্ক। ট্যাঙ্কের মোট আয়তন প্রায় এক লক্ষ বর্গফুট। চারটি সমান প্রকোষ্ঠে বিভক্ত ওই ট্যাঙ্ক। বয়সজনিত কারণে ব্রিটিশ আমলে তৈরি ওই ট্যাঙ্কে ছোট-বড় ছিদ্র বাড়তে থাকে।

নতুন সাজে: সংস্কারের পরে টালা ট্যাঙ্কের একটি প্রকোষ্ঠের ভিতরে পরিদর্শন। বুধবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

নতুন সাজে: সংস্কারের পরে টালা ট্যাঙ্কের একটি প্রকোষ্ঠের ভিতরে পরিদর্শন। বুধবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০১:২৯
Share: Save:

সম্পূর্ণ হল শতাব্দীপ্রাচীন টালা ট্যাঙ্কের প্রথম প্রকোষ্ঠের সংস্কারের কাজ। যা দেখতে বুধবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে টালা ট্যাঙ্কের উপরে ওঠেন। পরে জানান, আইআইটি এবং যাদবপুরের বিশেষজ্ঞদের উপদেশ মেনেই কাজ হয়েছে। প্রায় ২০ মাস সময় লেগেছে ওই কাজ করতে। তার জন্য এত দিন ওই প্রকোষ্ঠে জল ভরা বন্ধ ছিল। এ দিন থেকে ফের জল ভরা হচ্ছে এক কোটি লিটার ধারণক্ষমতার ওই প্রকোষ্ঠে। পুনরায় সেটি চালু হওয়ায় স্বস্তিতে পুরসভা।

এ দিন মহম্মদ আলি পার্কের নীচে ভূগর্ভস্থ জলাধারও দেখতে যান মেয়র। মাস কয়েক আগে ওই জলাধারের পাঁচিল ভেঙে পড়ায় প্রচুর জল বেরিয়ে ভেসে গিয়েছিল রাস্তা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ইতিমধ্যেই ওই জায়গা দেখে কী কী করণীয়, তার রিপোর্ট তৈরি করছেন। মেয়র এ দিন জানান, রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই পার্কে কলকাতার একটি বড় পুজো হয়। তা চালু রেখে এবং মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই জলাধারটি নির্মাণের কাজ করবে পুর প্রশাসন।

পুরসভা সূত্রের খবর, ১৯১১ সালে পলতা থেকে গঙ্গার জল শোধন করে রাখার জন্য তৈরি হয় টালা ট্যাঙ্ক। ট্যাঙ্কের মোট আয়তন প্রায় এক লক্ষ বর্গফুট। চারটি সমান প্রকোষ্ঠে বিভক্ত ওই ট্যাঙ্ক। বয়সজনিত কারণে ব্রিটিশ আমলে তৈরি ওই ট্যাঙ্কে ছোট-বড় ছিদ্র বাড়তে থাকে। মরচে পড়ায় অনেক ইস্পাতের পাত দুর্বল হয়ে পড়ে। ছিদ্র দিয়ে জল বেরিয়ে যাওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তায় পড়ে পুর প্রশাসন। বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে জানা যায়, ট্যাঙ্কে ব্যবহৃত ইস্পাত দিয়ে চারটি প্রকোষ্ঠ সংস্কারের কাজে খরচ হবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন জানানো হয়। সেই মোতাবেক মোট বাজেটের ৩৩ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করছে কেন্দ্র। বাকিটা দিচ্ছে রাজ্য এবং কলকাতা পুর প্রশাসন। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে প্রাথমিক কাজে নামে পুরসভা। মেয়র জানান, প্রথম প্রকোষ্ঠের কাজ এ দিন শেষ হয়েছে। আর একটি প্রকোষ্ঠের কাজ অর্ধেকের মতো হয়েছে।

আগামী ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করার সময়সীমা ধরা হয়েছে।

মহম্মদ আলি পার্কের নীচে থাকা জলাধারটিও ব্রিটিশ আমলে তৈরি। হঠাৎ তা ভেঙে পড়ায় পানীয় জল সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, প্রায় ৮০ মিটার বাই ৪০ মিটার মাপের ওই পার্কের নীচে থাকা জলাধারের প্রকোষ্ঠটি ইটের তৈরি। পার্ক হয়েছে পরে। সেখানে পুজোর সময়ে বহু মানুষের চাপ পড়ে। থাকে মণ্ডপের কাঠামোর চাপও। এ বার তাই সেখানে পুজো করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। মেয়র জানান, পার্কের একটা বড় অংশের নীচে পাঁচিল ভেঙে উপর থেকে আলগা হয়ে রয়েছে। বাকি যে অংশে কিছু হয়নি, সেখানে পুজো করা যেতে পারে। তবে সব কিছুই জানা যাবে বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট পাওয়ার পরে। এ দিন মহম্মদ আলি পার্ক পরিদর্শনের সময়ে মেয়রের সঙ্গে ছিলেন ওই পুজো কমিটির সদস্যেরাও। তাঁরাও মেয়রের সঙ্গে সহমত হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Tala Tank Firhad Hakim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE