প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে ফের পুলিশের হাতে প্রহৃত হলেন পুলিশকর্মী। এ বারের ঘটনাস্থল উল্টোডাঙা পুলিশ আবাসন। রবিবার রাতের এই ঘটনায় আহত হয়েছেন চার পুলিশকর্মী। ওই আবাসনের বাসিন্দা, সন্দীপ আচার্য এবং সুদীপ আচার্য নামে দু’জনকে আটক করেছে মানিকতলা থানার পুলিশ। এঁদের মধ্যে সন্দীপ কলকাতা পুলিশের কর্মী। তবে আরও চার অভিযুক্ত ফেরার।
গত শুক্রবার, দশমীর রাতে টালিগঞ্জের পুলিশ কোয়ার্টার্সে মদ্যপান এবং তারস্বরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় এক পুলিশকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল আর এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। এ বার প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে গোলমালের জেরে গণেশ সিংহ নামে এক পুলিশকর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, উল্টোডাঙা পুলিশ আবাসনে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানিয়েছেন সেখানকার আবাসিকরা। ওই আবাসনের বাসিন্দা, পেশায় পুলিশকর্মী প্রদীপ আচার্যের ছেলে সন্দীপও কলকাতা পুলিশের এক জন কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে সন্দীপ বহিরাগত যুবকদের ওই আবাসনের মধ্যে ডেকে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন রাত ১১টা নাগাদ আবাসন থেকে প্রতিমা বের করার সময়ে সন্দীপ বেশ কয়েক জন বহিরাগত যুবককে আবাসনের ভিতরে ঢোকান বলে অভিযোগ। সে সময়ে মত্ত অবস্থায় ওই যুবকেরা অশালীন আচরণ করলে গণেশবাবু তার প্রতিবাদ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, সে সময়েই সন্দীপ ও সুদীপ গণেশবাবুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁর মাথায় ঘুঁষি মারা হয় বলে অভিযোগ। গণেশবাবুকে মাটিতে ফেলে মারধর করতে দেখে তাঁর সহকর্মীরা ছুটে এসে বাধা দেন। তখন আরও তিন জনকে মারধর করা হয়। পরে গণেশবাবুকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মাথায় পাঁচটি সেলাই করা হয়।
সোমবার দুপুরে উল্টোডাঙার আবাসনের বাসিন্দারা এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এক আবাসিকের কথায়, ‘‘সন্দীপ পুলিশ হয়েও এক জন প্রবীণ পুলিশকর্মীকে যেভাবে মারধর করেছে তা অন্যায়।’’ আবাসিকদের অভিযোগ, সন্দীপের মদতে দীর্ঘদিন ধরেই বহিরাগতদের উৎপাত বাড়ছে। এখানকার মহিলা কর্মীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আবাসনের পাশেই মদের আসর বসে। পুলিশ আবাসনের মধ্যে আগে এই ধরনের অবৈধ কাজকর্ম চলত না। ইদানিং বহিরাগতদের উৎপাত বেড়েছে।’’
এ দিন গণেশবাবুর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘‘আমার স্বামী কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। আমরা এই ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ তবে টালিগঞ্জ পুলিশ কোয়ার্টার্সের মতো উল্টোডাঙার এই ঘটনাতেও মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy