Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রোদে দাঁড় করিয়ে ‘শাস্তি’ শিশুকে, বিক্ষোভ স্কুলে

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ক্লাস চলার সময়ে সহপাঠীর সঙ্গে দুষ্টুমি করার অভিযোগে আয়ুষ যাদব নামে প্রাক প্রাথমিকের এক পড়ুয়াকে শিক্ষিকা দেবারতি বারুই ক্লাসের বাইরে রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে দেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

ক্লাসে সহপাঠীকে বিরক্ত করার অপরাধে দেড় ঘণ্টা রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের এক পড়ুয়াকে। এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে বুধবার উত্তাল হল মধ্য হাওড়ার কালী কুণ্ডু লেনের একটি প্রাথমিক স্কুল। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে হেনস্থা করার পাল্টা অভিযোগ উঠেছে প্রাক প্রাথমিকের ওই পড়ুয়ার পরিজনেদের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। স্কুলের পক্ষ থেকে অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ক্লাস চলার সময়ে সহপাঠীর সঙ্গে দুষ্টুমি করার অভিযোগে আয়ুষ যাদব নামে প্রাক প্রাথমিকের এক পড়ুয়াকে শিক্ষিকা দেবারতি বারুই ক্লাসের বাইরে রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে দেন। অভিযোগ, প্রায় দেড়় ঘণ্টা ওই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার ফলে ছাত্রটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, স্কুল ছুটির পরে তাঁরা আয়ুষকে নিতে গিয়ে দেখেন দরদর করে ঘামছে ওই ছাত্র। আয়ুষের ঠাকুরমা রাধা রায়ের অভিযোগ, “ওকে দেড় ঘণ্টা রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। জল খেতে চাইলেও দেননি দিদিমণিরা। ও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।”

ওই পড়ুয়ার বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, এক সপ্তাহ আগে ওই শিক্ষিকাই আয়ুষের কপালে স্কেল দিয়ে মারলে কালশিটে পড়ে যায়। তাঁদের দাবি, ওই ভাবে মারার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল আয়ুষ। এক সপ্তাহ সে স্কুলে যায়নি। মঙ্গলবার সে আবার স্কুলে যায়। তার পরেই

আবার এই ঘটনা ঘটে। আয়ুষের বাবা অনিল যাদবের অভিযোগ, ‘‘এই ধরনের ঘটনা স্কুলটির অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গেও ঘটে থাকে। আয়ুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ও আর স্কুলে যেতে চাইছে না।’’

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবারের ঘটনার পরে শিশুটি বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। পরদিন পরিবারের লোকজন ওই স্কুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, পরিজনেরা অভিযুক্ত ওই দিদিমণির সঙ্গে কথা বলতে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে দেখা করতে দিতে অস্বীকার করেন। তখনও ওই ছাত্রের পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা স্কুলের পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে ওই শিক্ষিকাকে নানা ভাবে হেনস্তা করেন। পরে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ দিন অভিযুক্ত শিক্ষিকা বলেন, ‘‘‘সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। আয়ুষের মারপিট করা স্বভাব। ওকে দশ মিনিটের মতো দাঁড় করিয়ে রেখেছিলাম। তা-ও কেরেছিলাম প্রধান শিক্ষিকার নির্দেশে।’’ ওই শিক্ষিকার পাল্টা অভিযোগ, তাঁকে আয়ুষের পরিবারের পক্ষ থেকে হেনস্থা করা হয়েছে। এই ঘটনায় তিনি আতঙ্কিত।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে। সব খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE