Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নয়া কায়দায় জালিয়াতি

লালবাজার জানিয়েছে, এ শহরে বসে বিদেশি নাগরিকদের ঠকিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ডলার হাতিয়েছিল একটি সংস্থা। সেই অভিযোগে শুক্রবার ওই সংস্থার ডিরেক্টর শরাফত আলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র

—প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০২:২০
Share: Save:

ফের শহরে খোঁজ মিলল সাইবার জালিয়াতি চক্রের। এ বার দুষ্কৃতীদের নিশানায় মার্কিন নাগরিকেরা। লালবাজার জানিয়েছে, এ শহরে বসে বিদেশি নাগরিকদের ঠকিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ডলার হাতিয়েছিল একটি সংস্থা। সেই অভিযোগে শুক্রবার ওই সংস্থার ডিরেক্টর শরাফত আলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে কম্পিউটার, মোবাইল-সহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি। চক্রে জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

গত বছর জার্মানি থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি সেক্টর ফাইভের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় হানা দিয়ে আন্তর্জাতিক সাইবার জালিয়াতি চক্রের হদিস পেয়েছিল। মাসখানেক আগে নিউ টাউনেও এমনই চক্রের খোঁজ পান সিআইডি-র গোয়েন্দারা। তবে লালবাজারের খাতায় এমন অভিযোগ এই প্রথম। রাজ্য সরকারের বিশেষ সাইবার কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, সেক্টর ফাইভ বা নিউ টাউনের জালিয়াতি চক্রের অপরাধের কায়দার সঙ্গে এই চক্রের কায়দার অনেক মিল। তাঁর মতে, যে ভাবে বিপিও সংস্থা খুলে জালিয়াতি করা হচ্ছে তাতে বাকি সংস্থাগুলির সুনামও বিদেশি নাগরিকদের কাছে নষ্ট হবে। তার প্রভাব পড়তে পারে শিল্প ক্ষেত্রে।

পুলিশ জানায়, লালবাজারের সাইবার থানার অফিসারেরা এই চক্রের কথা সম্প্রতি জানতে পারেন। কী ভাবে চক্রের মাথাকে পাকড়াও করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকও হয়েছিল। তার পরেই বৃহস্পতিবার বেকবাগানে একটি শপিং মলের কাছে ওই সংস্থার অফিসে হানা দেন অফিসারেরা। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় শরাফতকে। এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করা হলে ধৃতকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক সত্যঅর্ণব ঘোষাল। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, শরাফতের বিরুদ্ধে আগে একটি চাঞ্চল্যকর মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। যদিও পরে পুলিশ জেনেছে, ওই ঘটনায় শরাফতের যোগ ছিল না।

পুলিশ জানায়, বেকবাগানে কল সেন্টার খুলেছিলেন শরাফত। সেখানে বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়োগ করে এই ব্যবসা ফেঁদেছিলেন। বেকবাগান থেকে ইন্টারনেট-কল করে বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হতো। একটি প্রথম সারির তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার নাম করে পরিষেবা দেওয়ার কথা বলে বিশ্বাস অর্জন করতেন শরাফতের কর্মীরা। ওই পরিষেবা দেওয়ার জন্য সফ্‌টওয়্যারের মাধ্যমে বিদেশি নাগরিকদের কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হতো। তার পরে অভিযুক্তেরাই ওই কম্পিউটার বিগড়ে দিতেন। সেই ত্রুটি দেখিয়ে ২০০-৩০০ ডলার হাতিয়ে ফের কম্পিউটারকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতেন। ‘‘এ-ও ঠিক অনেকটা র‌্যানসমওয়্যারের মতোই। শুধু ভাইরাসের বদলে প্রতারণা করে কম্পিউটারের দখল নেওয়া হতো। বেশির ভাগ প্রতারিতই বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা বলে জানতে পারছি’’— বলছেন এক গোয়েন্দা-কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE