—প্রতীকী ছবি।
ডাক্তারিতে ভর্তি করানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে আরও এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম চন্দন পাণ্ডা। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে। বুধবার একই অভিযোগে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বিষ্ণুদেব প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তিকে ধরে পুলিশ। তার থেকে বাজেয়াপ্ত করা চেকের সূত্র ধরে ভবানীপুর থানার পুলিশ ওই রাতেই চন্দনকে গ্রেফতার করে। দুই ধৃতকে বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
দিল্লির বাসিন্দা স্বপ্না ঠাকুর নামে এক তরুণী প্রতারিত হয়েছেন বলে বুধবার ভবানীপুর থানায় অভিযোগ করেন। স্বপ্নার দাবি, একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানোর আশ্বাস দিয়ে তাঁকে কলকাতায় ডেকে পাঠান এম হক নামে এক ব্যক্তি। তরুণীর বাবা গোপাল ঠাকুর এবং বাবার এক বন্ধুর সঙ্গে কলকাতায় এসে পার্ক সার্কাসের একটি হোটেলে ওঠেন তাঁরা। অভিযোগ, এসএসকেএম হাসপাতালে ডেকে পাঠিয়ে বিষ্ণুদেব তরুণীর থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। তার পরে হোটেলে গিয়ে স্বপ্নাদের থেকে ৬ লক্ষ টাকার চেক নেন। ফের টাকার দাবি করে এসএসকেএমে দেখা করতে গিয়ে ধরা পড়ে যান বিষ্ণুদেব।
তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, শুধু স্বপ্নাই নন। জয়েন্টের মেধা তালিকার পিছনে থাকা পরীক্ষার্থীদের অনেকের সঙ্গে একই কায়দায় যোগাযোগ করতেন ধৃতেরা। এমনকি, ভিন্ রাজ্যের এক পড়ুয়াকে টাকার বিনিময়ে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছিল বলেও পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ধৃতেরা। প্রকৃত ঘটনা জানতে তদন্তকারীরা ওই পড়ুয়া এবং বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজটির সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করবেন।
কী ভাবে ডাক্তারি পড়তে আগ্রহী পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে যেত প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্তেরা? ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে জয়েন্টের যে মেধা তালিকা থাকত, সে দিকে নজর রাখতেন চক্রের সদস্যেরা। তালিকার শেষে থাকা পরীক্ষার্থীদের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁদের ফোন করতেন এবং টাকার বিনিময়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেন। রাজি হলে তাঁকে কলকাতায় আসত বলতেন অভিযুক্তেরা। নিজেদের প্রভাব দেখিয়ে বিশ্বাস আদায় করতে সরকারি হাসপাতাল নিয়ে যেতেন। বুধবারও একই কায়দায় স্বপ্নাদের এসএসকেএমে ডেকে আনেন তাঁরা।
তাঁকে জেরা করেই চন্দনের খোঁজ পায় পুলিশ। বিষ্ণুদেব চেকটি চন্দনের নামেই লিখিয়েছিলেন। তরুণীর পরিবারকে জানানো হয়েছিল, ম্যানেজমেন্ট কোটায় তরুণীকে ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করাবেন চন্দন। ভবানীপুর থানার এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘চেকের সূত্র ধরে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে চন্দনের খোঁজ মেলে। চন্দনের তমলুকের বাড়ি থেকে ছ’লক্ষ টাকার চেকটি উদ্ধার হয়েছে। এই দু’জন ছাড়াও ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে।’’ তদন্তকারীদের অনুমান, ডাক্তারিতে ভর্তি করানোর নামে একটি আন্তঃরাজ্য চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তারই খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy