মিছিলে কামিল এস। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
বাদামি চুল। ধূসর জ্যাকেট। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে বিশাল মিছিলে পা মেলানো এক ভিন্ দেশি তরুণ নজর কাড়ছিলেন অনেকেরই।
বৃহস্পতিবার দুপুর তখন দুটো। দুপুর একটা নাগাদ বেরোনো মিছিলের শেষ প্রান্ত তখন রামলীলা ময়দানে। সেখানে দাঁড়িয়েই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল যুবকের সঙ্গে গলা মেলাচ্ছেন এক বিদেশি। অনেকের চোখই তখন তাঁর দিকে। পরে জানা গেল, যাদবপুরের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের পড়ুয়া ওই যুবকের নাম কামিল এস। তিনি আদতে পোল্যান্ডের বাসিন্দা।
মিছিলে হাঁটার সময়ে ভিড়ের চাপে ভাল ভাবে কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না কামিল। চার দিকে মুহুর্মুহু স্লোগানের আওয়াজ। তারই মধ্যে ওই যুবক বললেন, ‘‘নয়া নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী আন্দোলন এখন শুধু ভারতে সীমাবদ্ধ নেই। বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষক ও পড়ুয়ারা এই আইনের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। আমিও তাই রাস্তায় হাঁটলাম।’’ হতাশা চেপে রাখতে না পেরে কামিল এর পরে যোগ করেন, ‘‘ভারতীয় সংস্কৃতিতে মুগ্ধ হয়ে এখানে আগেও এসেছি। এ দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। কিন্তু ধর্মীয় বিভাজনের নামে নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ করেছে এ দেশের বর্তমান সরকার। ভারতের পক্ষে যা চরম লজ্জাজনক।’’
কামিল জানেন, এই আইনের বিরোধিতায় দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে আন্দোলন। এমনকি, দু’টি প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের যে ভাবে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ, তা-ও কামিলের অজানা নয়। ছাত্র-নিগ্রহের ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন কামিল। বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা দেশের স্বার্থে ন্যায্য আন্দোলনই করছেন। পুলিশের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছি।’’ কামিলের মতে, ‘‘সরকার যত দ্রুত এই আইন প্রত্যাহার করবে, দেশের পক্ষে ততই মঙ্গল।’’ পঞ্জাবের বাসিন্দা অঙ্গদ নামে এক যুবক এখন কর্মসূত্রে থাকেন কলকাতায়। এ দিন মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন তিনিও। তাঁর কথায়, ‘‘নাগরিকত্ব আইন বলবৎ হলে অনেক পঞ্জাবিও দেশছাড়া হবেন। ধর্মীয় বিভাজনের নামে এই আইন কখনও মেনে নেওয়া যাওয়া না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy