Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যুৎ বন্ধ, ওষুধ ঠিক থাকবে তো!

বাগড়ি মার্কেটের আগুনে ওষুধ নষ্ট তো হয়েছেই! সমস্যা বেড়েছে পাশের মেহতা বিল্ডিংয়ের অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক এবং প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

বাগড়ি মার্কেটের আগুনে ওষুধ নষ্ট তো হয়েছেই! সমস্যা বেড়েছে পাশের মেহতা বিল্ডিংয়ের অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়। এর ফলে ওষুধ বাজারের সমস্যা আরও ঘোরালো হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা।

বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগার কয়েক ঘণ্টার পরেই মেহতা বিল্ডিংয়ের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয়। ফলে বহু জীবনদায়ী ওষুধের কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। ইনসুলিন, ভ্যাকসিন-সহ বেশ কিছু ওষুধ রেফ্রিজারেটরে রাখতে হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ না-থাকলে রেফ্রিজারেটরে ওষুধ থাকা আর না-থাকার মধ্যে কোনও ফারাক হয় না। কারণ, ওষুধগুলি ৭২ ঘণ্টার বেশি রেফ্রিজারেটরের বাইরে থাকলে তার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সেই আশঙ্কা অত্যন্ত তীব্র বলে ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিমত। বহু ক্ষেত্রেই ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে। মেহতা বিল্ডিংয়ে দেড় শতাধিক ওষুধের দোকান রয়েছে। মঙ্গলবার অবশ্য ওই ভবনের একটা অংশে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

এ দিন রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলারের সঙ্গে দেখা করেন বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিসিডিএ)-এর কর্তারা। বাগড়ি মার্কেটের পরিস্থিতির কথা জানিয়ে তাঁরা ড্রাগ কন্ট্রোলারের কাছে আবেদন জানান, সেখানকার ব্যবসায়ীরা অন্য কোথাও ব্যবসা করার লাইসেন্স চাইলে মানবিকতার কারণে তা যেন দ্রুত দেওয়া হয়। এমনিতে ব্যবসার লাইসেন্স পেতে কয়েক মাস লাগে। কন্ট্রোলার এই বিষয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন বলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুবোধ ঘোষের দাবি। ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁদের।

সাধারণত ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিতে ‘পোস্ট ডেটেট চেক’ দেওয়া থাকে। প্রতিদিন বিক্রির পরে ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়া হয়। কেনাবেচার টাকা জমা দেওয়ার ভিত্তিতে ব্যাঙ্ক থেকে ওই সব আগাম জমা দেওয়া আমানত থেকে ‘পোস্ট ডেটেট’ চেক ‘ক্লিয়ার’ হয়। এ ক্ষেত্রে যদি কয়েকটি চেক ‘ক্লিয়ার’ না-হয়, তা হলে ওই সব কোম্পানি ধারে ওষুধ দেওয়া বন্ধ করে দেবে। তখন অগ্রিম টাকা অর্থাৎ ‘ব্যাঙ্ক ড্রাফট’ জমা দিয়ে ওষুধ কিনতে হবে। তাতে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। ওষুধ কোম্পানিগুলিকে পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে। প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে আবেদন জানিয়েছে বিসিডিএ।

মেহতা মাকের্টের বিজনেসম্যান সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাশোসিয়েশনের সম্পাদক অসীম দে বলেন, ‘‘এখন আমাদের সমস্যা রেফ্রিজারেটরে থাকা ওষুধের ঠিকঠাক সংরক্ষণ। দীর্ঘ সময় ওই ওষুধ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় না-থাকলে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা থাকে। বাইরে থেকে দেখে ওই সব ওষুধের অবস্থা বোঝারও উপায় নেই।’’ সংগঠনের নেতাদের আশঙ্কা, লোকসান এড়াতে ওই সব ওষুধ কেউ কেউ হয়তো বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু ওষুধের প্যাকেটের গায়ে কার্যকারিতার সময়সীমার উল্লেখ থাকলেও তা কার্যকর না-ও হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE