Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Ballygunge

স্ত্রী বদল মামলা: স্বামী ভাশুরের জামিনে আপত্তি নেই অভিজাত বধূর

এজলাসে মামলা ওঠার আগেই আলিপুরের পুলিশ কোর্ট চত্বরে ‘মিটমাট’-এর কথা চাউর হয়ে গিয়েছিল। ছড়িয়ে গিয়েছিল, কড়েয়া থানার সাত নম্বর কেসে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণীর পরিবার আদালতের বাইরে বসে বোঝাপড়া করে নিয়েছে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:৫৪
Share: Save:

এজলাসে মামলা ওঠার আগেই আলিপুরের পুলিশ কোর্ট চত্বরে ‘মিটমাট’-এর কথা চাউর হয়ে গিয়েছিল। ছড়িয়ে গিয়েছিল, কড়েয়া থানার সাত নম্বর কেসে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণীর পরিবার আদালতের বাইরে বসে বোঝাপড়া করে নিয়েছে। তাই অভিযোগকারিণী গৃহবধূ গোপন জবানবন্দি দিতে হাজির না-ও হতে পারেন।

কিন্তু ওই বধূ এসেছিলেন। কালো পালাজো এবং ছাই রঙের লং সোয়েটার পরে দুই আত্মীয়কে নিয়ে খোদ এসে বোঝাপড়ার কথা জানালেন আদালতকে।

সোমবার দুপুরে এ ভাবেই কড়েয়া থানার সাত নম্বর কেসের নতুন মোড় দেখল আদালত এবং আইনজীবী মহল। এ দিন প্রথমে নিজের আইনজীবী মারফত এবং পরে নিজে আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে দাঁড়িয়ে হলফনামার কথা জানান বালিগঞ্জের অভিজাত সেন পরিবারের অভিযোগকারিণী ছোট বৌ। তিনি হলফনামায় জানান, গোলমাল মিটে যাওয়ায় অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের জামিনে তাঁর কোনও আপত্তি নেই।

আরও পড়ুন: থানার নাকের ডগায় ব্যাঙ্কে রাতভর অপারেশন, ভল্ট কেটে লুঠ ৫০ লাখ!​

গত ৩ জানুয়ারি বালিগঞ্জের এক অভিজাত পরিবারের ছোট বৌ কড়েয়া থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে বিকৃত যৌন লালসা মেটানো এবং ভাশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। পণের দাবিতে তাঁর উপর অত্যাচারেরও অভিযোগ আনেন তিনি। সেই রাতেই গ্রেফতার হন ওই বধূর স্বামী ও ভাশুর। পরে দু’জনের দু’দফায় পুলিশি হেফাজত হয়।

এ দিন দু’ভাইকে ফের আদালতে হাজির করানোর কথা ছিল। সেই হাজিরার দিনেই ‘মিটমাট’ হয়ে যাওয়ার কথা জানানোয় দুই অভিযুক্ত ভাইয়ের আইনজীবী শেখ সেলিম রহমান তাঁর মক্কেলদের জামিনের আবেদন করেন। বিচারকের সামনে তার জন্য অভিযোগকারিণীকেও হাজির করানো হয়। এজলাসে ওই বধূ হাজির হলে বিচারক তাঁর নাম জানতে চান। নিজের নাম বলার পরে অভিযোগকারিণী খোদ বিচারকের সামনে হলফনামার কথা স্বীকার করেন এবং জানান, যে-অভিযোগ তিনি এনেছিলেন, তা মিটমাট হয়ে গিয়েছে। ওঁরা (স্বামী ও ভাশুর) জামিন পেলে তাঁর আপত্তি নেই।

আরও পড়ুন: কুকুর খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজনরা চিহ্নিত, তিন ছাত্রীকে জেরা পুলিশের, চলছে বিক্ষোভ

দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক জানান, ওই বধূ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এবং ৩৭৭ নম্বর ধারায় যে-সব অভিযোগ এনেছেন, তা মারাত্মক। অভিযোগের সামাজিক প্রভাবও খুব বেশি। ফলে আইন মেনে চললে এ ধরনের মামলায় জামিন দেওয়ার কোনও এক্তিয়ার তাঁর নেই।

পরে আইনজীবীদের একাংশ জানান, আসলে ৩৭৬ এবং ৩৭৭ নম্বর ধারায় অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হয়। এই ধরনের মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দেওয়ার ক্ষমতা এই আদালতের নেই। তার জন্য দায়রা আদালতে আবেদন করতে হবে। তিনি দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই অভিযুক্ত ভাইকে জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিচারক অভিযুক্তদের আইনজীবীদের বলেন, ‘‘যদি জামিনের দরকার হয়, আপনারা উচ্চ আদালতে আবেদন করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ballygunge Rape Sexual Harassment Molestation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE