Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রচারই সার, এখনও সচেতন নয় বিধাননগর

বিধাননগরের বাসিন্দারা বলছেন, ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে শুধু লিফলেট, বিজ্ঞাপন-হোর্ডিংই যথেষ্ট নয়। মশা-নিধনে বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে পুরসভার একযোগে কাজ করা প্রয়োজন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

এ বছরের শুরু থেকে লাগাতার প্রচার এবং বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহের কাজ হয়েছে। সে কারণেই জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কম বলে দাবি বিধাননগর পুরসভার। কিন্তু গত সপ্তাহে ডেঙ্গিতে এক মহিলা ও এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় এই দাবির বাস্তবতা এখন প্রশ্নের মুখে। ডেঙ্গি নিয়ে গতানুগতিক প্রচারে আখেরে যে বিশেষ লাভ হয়নি, তা কার্যত স্বীকার করছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

বিধাননগরের বাসিন্দারা বলছেন, ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে শুধু লিফলেট, বিজ্ঞাপন-হোর্ডিংই যথেষ্ট নয়। মশা-নিধনে বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে পুরসভার একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। তবেই এই প্রচার ফলপ্রসু হতে পারে। যেমন, গত বছর জ্যাংরায় মহিলারাই এলাকা সাফ করতে কোমর বেঁধে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাতে কাজ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর এ নিয়ে পুরসভার সদিচ্ছা কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। বাগুইআটির বাসিন্দা সোমেশ্বর বাগুই বলেন, ‘‘গত বছর আমরাই জনমত গঠনে পথে নেমেছিলাম। এ বারেও নামব। কিন্তু বাসিন্দাদের নিয়ে সচেতনতার কাজে পুরসভার কোনও হেলদোল নেই।’’

সল্টলেকের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, প্রচার কিংবা মশা নিধনের কাজে পুর কর্মীরা সাধারণত দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে বাড়ি বাড়ি যান। কিন্তু সে সময়ে অনেকেই তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে দিতে চান না। এমনকি, মশা মারার কাজ করতে পুর কর্মীদের মারধর করা হয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে। বাসিন্দাদের মতে, ব্লক কমিটি এবং স্থানীয় ক্লাবের প্রতিনিধিদের নিয়ে একযোগে কাজ করলে তা যেমন অনেকটা সহজ হয়, তেমনই জনমত গঠনের কাজও দ্রুত সম্ভব হয়। কিন্তু অভিযোগ, কাউন্সিলরদের মধ্যে এ নিয়ে তেমন তৎপরতা চোখে পড়ে না।

তবে সল্টলেকের বাসিন্দাদের এক সংগঠনের সদস্য কুমারশঙ্কর সাধু অবশ্য পুরসভার ঘাড়ে দোষ চাপাতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘বাসিন্দাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তবে পুর প্রশাসন যদি ব্লক কমিটিগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন, কী ভাবে বাসিন্দারা কাজ করতে পারেন তার রূপরেখা ঠিক করে দেন, তা হলে ভাল হয়।’’

তবে জনমত গঠনে পুরসভার সদিচ্ছা সংক্রান্ত অভিযোগ মানতে নারাজ মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। তিনি বলেন, ‘‘বছরের শুরু থেকেই সচেতনতার প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও সচেতনতার অভাব অনেকটাই। স্থানীয় সংগঠনগুলিকে নিয়ে এই কাজে জোর দেওয়ার ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ভাবেও পরিকল্পনা করছি।’’

পুর প্রশাসনের একাংশের মতে, গত সপ্তাহের ডেঙ্গি-মৃত্যুর ঘটনাতে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতার অভাব স্পষ্ট। জ্বর হলেও সময়ে রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন না অনেকে। যত ক্ষণে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে জ্বর কমে গেলে পরবর্তী চিকিৎসা মানছেন না। ফলে সমস্যা বাড়ছে। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাড়ির চৌহদ্দি সাফ রাখলেই মশাবাহিত রোগ অনেকটা ঠেকানো সম্ভব। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, জ্বরে আক্রান্তদের বাড়ি কিংবা আশেপাশেই জমা জলে লার্ভা মিলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Municipality Awareness Bidhannagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE