রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। ফাইল চিত্র
যাঁরা মেরেছেন, তাঁরাই তদন্ত করছেন— পুরুলিয়ার জয়পুরে ২৭ অগস্ট দুই ‘বিজেপি কর্মী’র মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে এই মন্তব্যই করল রাজ্য বিজেপি। বুধবার রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে বিজেপি দাবি করল, পুলিশই গুলি করে মেরেছে বিজেপির দুই কর্মীকে। সেই পুলিশকেই যখন তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে, তখন কিছুতেই নিরপেক্ষ তদন্ত হবে না বলে মনে করছে বিজেপি। রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। পুলিশকর্তাদের তলব করতে পারেন রাজ্যপাল, জানিয়েছে বিজেপি।
বুধবার মুকুল রায়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রাজভবনে গিয়েছিল। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা, জয়প্রকাশ মজুমদার প্রমুখ মুকুল রায়ের সঙ্গে ছিলেন। পুরুলিয়ার জয়পুর থানা এলাকার ঘাঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে কী ভাবে গোলমাল শুরু হয়েছিল তা বিশদে জানানো হয়েছে চিঠিতে। পুলিশ এবং তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হাত মিলিয়ে কাজ করছিল বলে দাবি করা হয়েছে চিঠিতে। বিনা প্ররোচনায় সে দিন পুলিশ গুলি চালিয়েছিল বলেও দাবি করা হয়েছে।
রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে বিজেপি লিখেছে, রাজ্যের প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করবে, এমনটা আশা করাই যায় না। তাই সিবিআইয়ের মতো কোনও এজেন্সিকে দিয়ে সে দিনের ঘটনার তদন্ত করানোর নির্দেশ দেওয়া হোক— রাজ্যপালের কাছে এই দাবিই বিজেপি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: বচসার জেরে বৃদ্ধ দম্পতি ও তাঁদের ছেলেকে মারধর, সিন্ডিকেটই কি কারণ?
২৭ অগস্ট ঘাঘরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হিংসাত্মক ঘটনায় যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল, সেই নিরঞ্জন গোপ এবং দামোদর মণ্ডলকে বিজেপি কর্মী বলে মানতে চায়নি তৃণমূল। ওঁদের মধ্যে অন্তত এক জনকে তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করা হয়েছিল এবং বিজেপির বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। পুলিশও জানিয়েছিল যে, পুলিশের গুলিতে কারও মৃত্যু হয়নি কারণ পুলিশ শূন্যে গুলি চালিয়েছিল। কী ভাবে দু’জনের মৃত্যু হল, তার তদন্ত শুরু করেছিল জয়পুর থানা। বিজেপি দাবি তুলেছে, জয়পুর থানা তথা পুলিশের হাত থেকে তদন্তের ভার সরিয়ে নিতে হবে।
রাজভবন থেকে ফিরে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘জয়পুর থানার পুলিশ আমাদের দুই কর্মীকে গুলি করে মারল। এখন সেই জয়পুর থানাই তদন্ত করছে। অর্থাৎ, যাঁরা খুন করলেন, তাঁরাই তদন্ত করছেন। নিরপেক্ষ তদন্ত যে হবে না, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে এসেছি।’’
আরও পড়ুন: ‘ছেলেটা যে চলে গেল, সেটা কিছু নয়!’
হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যপাল, দাবি বিজেপি নেতাদের। সায়ন্তন বসুর কথায়: ‘‘রাজ্যপাল পুরো পরিস্থিতির কথা শুনেছেন। তিনি অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।’’ সর্বাগ্রে কী পদক্ষেপ করতে পারেন রাজ্যপাল? সায়ন্তন জানালেন, ‘‘রাজ্যপাল বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি পুলিশকর্তাদের ডেকে পাঠাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy