প্রস্তুতি: মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে চলছে নাটকের মহড়া। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
শরণার্থীদের সমস্যা নিয়েই ওঁরা মঞ্চস্থ করেন নাটক। গোটা বিশ্ব ঘুরে বেড়ান নাটকের দল নিয়ে। সিরিয়া, পাকিস্তান, মেক্সিকো, আফগানিস্তান ঘুরে এ বার ওঁরা এসেছেন কলকাতায়। ভারত ও বাংলাদেশের কয়েক জন কলাকুশলী নিয়ে তাঁরা ইতিমধ্যেই পেট্রাপোল এবং গোসাবায় মঞ্চস্থ করে ফেলেছেন দেশভাগ ও শরণার্থীদের নিয়ে নাটক ‘বর্ডার ন্যারেটিভস’। এ বার সেই নাটক হবে কলকাতাতেও।
কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেটের উদ্যোগে মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে সেই নাটকেরই মহড়া চলছে জোরকদমে। নিউ ইয়র্কের বন্ড স্ট্রিট থিয়েটারের জোয়ানা শেরমান এবং মাইকেল ম্যাকগুইগানের পরিচালনায় হচ্ছে এই নাটক। মহড়ার ফাঁকেই জোয়ানা বলেন, ‘‘আফগানিস্তান সীমান্তই হোক, মেক্সিকো সীমান্ত অথবা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত— শরণার্থীদের গল্পটা তো অনেকটাই এক। তাই বাংলা না জানলেও নাটক পরিচালনা করতে কোনও অসুবিধা হয়নি।’’ অন্য দিকে, মাইকেল বলেন, ‘‘ধর্ম কখনও দুই সম্প্রদায়কে বিভাজন করে না। বরং দুই সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করে। ভারত-বাংলাদেশের দেশভাগের পটভূমিতে শরণার্থীদের নিয়ে নাটকে এটাই তুলে ধরা হবে।’’ পরিচালকেরা জানালেন নাটকটি একটি ‘ডান্স থিয়েটার’।
ভারত ও বাংলাদেশের ১৫ জন তরুণ-তরুণী এই নাটকে অভিনয় করছেন। এঁরা কিন্তু প্রত্যেকেই পেশাদার শিল্পী নন। যেমন, শিলিগুড়ির পারমিতা ঘোষ এক জন কলেজ ছাত্রী।
তিনি বলেন, ‘‘দেশভাগের গল্প আমরা আমাদের মা-বাবার কাছে শুনেছি। শরণার্থী হয়ে এখানে আসার সেই গল্প আমাদের প্রজন্মের অনেকেই হয়তো জানেন না। সেই গল্পই এই প্রজন্মকে শোনাতে এই নাটক।’’ বাংলাদেশ থেকে এ দেশে আসা সৈয়দ মিনহাস হোসেন, নুসরৎ জাহানেরা জানালেন, পেট্রাপোলের ‘নো-ম্যানস ল্যান্ডে’ তাঁরা এই নাটক মঞ্চস্থ করে প্রচুর সাড়া পেয়েছেন। নুসরৎ বলেন, ‘‘প্রথম বার ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে এসে নাটক করলাম। নাটকের শেষে দর্শকদের প্রশ্ন করেছিলাম, দু’দেশের মাঝের এই কাঁটাতার না হলে কেমন হত? দেখলাম, কয়েক জন দর্শকের তখন চোখে জল।’’
নাটকের এক শিল্পী শুভদীপ গুহ বলেন, ‘‘এই দুই পরিচালকের থেকে আমরা অনেক অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।’’ কলকাতায় নাটক মঞ্চস্থ করার পরে দুই মার্কিন পরিচালক ফিরে যাবেন নিউ ইয়র্কে। তাঁরা জানান, নাটক করতে এসে তাঁরা দুই দেশের এই তরুণ কলাকুশলীদের ভালবেসে ফেলেছেন। জোয়ানা ও মাইকেলের মতে, ‘‘এঁদের সবার ভাষা, সংস্কৃতি তো এক। তবু ওঁদের দেশটা আলাদা হয়ে গেল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy