Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Bowbazar

সেকরাপাড়ায় ঘরছাড়া বাসিন্দার মৃত্যু, হোটেলে অব্যবস্থাকেই দায়ী করল পরিবার

অঞ্জলিদেবীর পরিবারের দাবি, হোটেলের পরিবেশে নিজেকে মানাতে পারছিলেন না তিনি। সেখানকার খাবারও নিম্ন মানের।

বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় অঞ্জলি মল্লিকের। —নিজস্ব চিত্র।

বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় অঞ্জলি মল্লিকের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:৪৬
Share: Save:

মেট্রোয় সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের কারণে ২/১/বি সেকরাপাড়া লেনের বাসিন্দা অঞ্জলি মল্লিককে বাড়ি ছেড়ে হোটেলে উঠতে হয়েছিল। ৮৫ বছর বয়সে এক বার নয়, হোটেলে যেতে হয়েছিল দু’বার। সম্প্রতি তাঁর অস্থায়ী ঠিকানা ছিল এসএন ব্যানার্জি রোডের উপর একটি হোটেল। সেখানে থাকা অবস্থাতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার রাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই ওই বৃদ্ধার পরিবারের তরফে অভিযোগ ওঠে, হোটেলে চূড়ান্ত অব্যবস্থার কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

অঞ্জলিদেবীর পরিবারের দাবি, হোটেলের পরিবেশে নিজেকে মানাতে পারছিলেন না তিনি। সেখানকার খাবারও নিম্ন মানের। অভিযোগ, বার বার বলা সত্ত্বেও এ বিষয়ে মেট্রো বা হোটেল কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেননি। ওই বৃদ্ধার নাতি অন্বয় বসু জানিয়েছেন, মেট্রোর কাজের জন্যে গত ২২ এবং ২৩ অগস্ট বাড়ি ছেড়ে হোটেলে যেতে হয়েছিল তাঁদের পরিবারকে। সঙ্গে ছিলেন অঞ্জলিদেবীও। এর পর ২ সেপ্টেম্বর বিপর্যয়ের পর ওই বৃদ্ধার নাতি মেট্রোর স্থানীয় কন্ট্রোল রুমকে জানান, অঞ্জলিদেবীর বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

মেট্রো কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাঁকে মধ্য কলকাতার একটি হোটেলে নিয়ে যান। পরে এসএন ব্যানার্জি রোডের একটি হোটেলে স্থানাস্তরিত করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, ওই হোটেলের যে রুমে তিনি ছিলেন সেখানে জানলা ছিল না। যে খাবার দেওয়া হচ্ছিল, তা-ও খেতে পারছিলেন না অঞ্জলিদেবী। বৃদ্ধার নাতি জানিয়েছেন, অঞ্জলিদেবীর গুরুতর কোনও অসুস্থতা ছিল না। কিন্তু সব মিলিয়েই তাঁর সমস্যা হচ্ছিল। গত ৮ সেপ্টেম্বর বাড়ির একাংশে ফাটল দেখা দেওয়ার খবর পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে সুস্থ হয়ে যান। পরে আবার অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মঙ্গলবার তিনি মারা যান।

মেট্রো সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ে বৌবাজারের বহু মানুষ ঘরছাড়া। —নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রাজীব মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে শুক্রবার​

বাড়িতে ফাটলের শোকের সঙ্গে হোটেলের চরম অব্যবস্থাকে তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে পরিবারের তরফে দায়ী করা হলেও তা মানতে নারাজ পুরসভা এবং কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড। স্থানীয় কাউন্সিলর সত্যেন্দ্র দের বক্তব্য, “ঘটনার পর প্রশাসন এবং পুরসভাও স্থানীয় বাসিন্দাদের খেয়াল রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের পরই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ৫ লক্ষ টাকা করে মেট্রো ক্ষতিপূরণও দিচ্ছে। ওই বৃদ্ধাকে অ্যাম্বুল্যান্স করে বাড়ি থেকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক সমস্যা ছিল। বয়স তো হয়েছিলই। এর সঙ্গে মেট্রোর বিষয়টি মিলিয়ে দিলে হবে না। ওঁর হার্ট অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।” মেট্রোর এক কর্তা জানিয়েছেন, কারও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না তা প্রতিটা হোটেলে গিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও শরীর অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাপরেও আমরা নজর দিচ্ছি।

আরও পড়ুন: বিজেপি যুব মোর্চার সিইএসসি অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার, পুলিশের জলকামান-কাঁদানে গ্যাস​

এ দিন অঞ্জলিদেবীর দেহ বৌবাজারের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তাঁর পরিবার। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে সেখানে কিছু ক্ষণ রেখে দেওয়া হয়। পরে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE