Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata News

কোল্ড ড্রিঙ্কস ভেবে অ্যাসিড খেল বালক, প্রাণ ফেরাল শহরের হাসপাতাল

কয়েক মাস আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিল বিশ্ব (নাম পরিবর্তিত)। তারও মাসখানেক আগে সে সালফিউরিক অ্যাসিড খেয়েছিল।

সুস্থ হওয়া সেই কিশোর। নিজস্ব চিত্র।

সুস্থ হওয়া সেই কিশোর। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ২১:১০
Share: Save:

কোল্ড ড্রিঙ্কস ভেবে সালফিউরিক অ্যাসিড খেয়ে ফেলেছিল বাচ্চাটি। তার পর থেকে খাবার তো দূরঅস্ত্‌, জল খাওয়ার ক্ষমতাও ছিল না বছর দশেকের ওই বালক। সম্প্রতি স্টেন্ট বসিয়ে তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলেছে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল।

কয়েক মাস আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিল বিশ্ব (নাম পরিবর্তিত)। তারও মাসখানেক আগে সে সালফিউরিক অ্যাসিড খেয়েছিল। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন, খাদ্যনালী যেখানে গলবিলের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে বিশ্বের সেই জায়গাটি অ্যাসিডে সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। মাসখানেক ধরে কিছুই না খেতে পারার জন্য অপুষ্টিতেও ভুগছিল সে। ওজন কমে দাঁড়িয়েছিল ২০ কেজি।

ওই হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জয়ন্ত সামন্ত বলেন, ‘‘সরু খাদ্যনালী খোলার ক্ষেত্রে আমাদের অসুবিধা ছিল না। চিন্তার কারণ ছিল, ছেলেটির বয়স এবং সঙ্গে তার অপুষ্টি।’’ তিনি আরও জানান, প্রথমে বিশ্বের জিআই এন্ডোস্কোপি হয়। তখন ধরা পড়ে, অন্ননালীর নীচের অংশটা সরু হয়ে গিয়েছে। অপুষ্টি কাটাতে ওই সময়ে রাইলস টিউব দিয়ে তাকে খাওয়ানো শুরু হয়।

আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে বিমানে আগুন

এক মাস পর দেখা যায়, বিশ্বের বাঁ দিকের রেসপিরেটরি টিউবের মাঝখানে ফিস্টুলার সমস্যা দেখা দিয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে ডাইলেটেশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। পরবর্তী কালে এক মাস ধরে দু’বার তার ডাইলেটেশন করা হয় বলে জানিয়েছেন জয়ন্তবাবু। তখন আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পুরোদস্তুর অপারেশন না করে বিশ্বের খাদ্যনালীর সঙ্গে স্টেন্ট জুড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু, বাজারে তো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যই পাওয়া যায় স্টেন্ট! ওই সুপার স্পেশালটি হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের ডিরেক্টর প্রদীপ্তকুমার শেঠী বলেন, ‘‘প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পুরোদস্তুর মেটালের ওই স্টেন্ট ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, ছোটদের ক্ষেত্রে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। শুধু তাই নয়, প্রক্রিয়াগত জটিলতাও তো থাকে।’’

আরও পড়ুন: প্লাস্টিকশূন্য হচ্ছে না বইমেলাও

তবে, স্টেন্ট বসানোর ক্ষেত্রে বিশ্বকে নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। তার পর থেকেই কোনও রকম সমস্যা ছাড়াই বিশ্ব সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে। ধীরে ধীরে তাকে তরল থেকে একটু শক্ত খাবার দেওয়া হতে থাকে। সপ্তাহ দুয়েক পর থেকে সাধারণ জীবনযাপনে ফিরে আসে বিশ্ব। হাসাপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ছয় সপ্তাহের মধ্যে তার স্টেন্ট বার করে দেওয়া হয়েছে। ফিস্টুলার সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি তার খাদ্যনালীও স্বাভাবিক ভাবে কাজ করছে। স্টেন্ট বার করার পর ওই কিশোর এখন জিআই টিমের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান অলোক রায় বলেন, ‘‘ওই কিশোর ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে বলে আমরা ভীষণ খুশি। শুরুতে অনেক কষ্ট পেলেও সঠিক চিকিৎসায় ও অনেকটাই ভাল রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE