Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দুই দলের খণ্ডযুদ্ধে তপ্ত পাড়া, জখম ৭

পাশের জগন্নাথ ঘোষ রোডের বস্তির কয়েক জন সিপিএম সমর্থক মত্ত অবস্থায় সেখানে ঢুকে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে।

তাণ্ডব: সংঘর্ষের পরে কসবার বৈকুণ্ঠ ঘোষ রোড। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

তাণ্ডব: সংঘর্ষের পরে কসবার বৈকুণ্ঠ ঘোষ রোড। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ০২:৪৪
Share: Save:

পাশাপাশি দু’টি বস্তির মধ্যে পুরনো রাজনৈতিক বিবাদ ছিলই। তাকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে উত্তপ্ত হল কসবার জগন্নাথ ঘোষ রোড। পুলিশ জানিয়েছে, কসবা থানার জগন্নাথ ঘোষ রোড ও বৈকুণ্ঠ ঘোষ রোড এলাকার দু’টি বস্তির সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হন সাত জন। গোলমাল থামাতে গিয়ে জখম হন পাঁচ পুলিশকর্মী। এই ঘটনায় দু’দলের মোট দশ জন গ্রেফতার হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যায় কসবার কুমোরপাড়ার বৈকুন্ঠ ঘোষ রোডে কীর্তনের আসর বসেছিল। অভিযোগ, পাশের জগন্নাথ ঘোষ রোডের বস্তির কয়েক জন সিপিএম সমর্থক মত্ত অবস্থায় সেখানে ঢুকে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিশোধ নিতে জগন্নাথ ঘোষ রোড থেকে সিপিএম সমর্থকেরা আরও লোকজন নিয়ে কুমোরপাড়ার হাজির হয়। সেখানকার তৃণমূল সমর্থকদের লক্ষ্য করে মদের বোতল, ইট ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। দু’পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। খবর পেয়ে পৌঁছয় কসবা থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় রাতে র‌্যাফ নামে। দু’গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর, ইট, মদের বোতলের আঘাতে জখম হয়েছেন পাঁচ পুলিশকর্মী। রাতে লালবাজার থেকে বিশেষ বাহিনী আসে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়।

আরও পড়ুন: সরকারি ডাক্তারও জাল!

সোমবার দুপুরে জগন্নাথ ঘোষ রোডে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তা জুড়ে উল্টে রয়েছে রিকশা-ভ্যান। বৈকুন্ঠ ঘোষ রোডে রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ভাঙা বোতলের টুকরো। স্থানীয় সিপিএম কর্মী পাঁচু হালদার বলেন, ‘‘রাতে কুমোরপাড়ার তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডারা এসে বস্তির বাড়ি ও রিকশাগুলিতে ভাঙচুর চালায়।’’ জগন্নাথ ঘোষ রোডের বস্তির বাসিন্দা ইন্দ্রাণী হালদারের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পুলিশের সামনে বাড়ি ভাঙচুর করেছে। লাঠির আঘাতে আমার হাত ভেঙে দিয়েছে।’’ যদিও কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসএসডি) ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর ওই ঘটনার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থল থেকেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ কাউকে আক্রমণ করেনি।’’

রবিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে এলাকার কাউন্সিলর, সিপিএমের অন্নপূর্ণা দাস অভিযোগ করেন, ‘‘স্থানীয় বাম কর্মীরা নবান্ন অভিযানে অংশগ্রহণ করায় তাঁদের ভয় দেখাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। ৯১ নম্বর ওয়ার্ড দীর্ঘ দিন তৃণমূলের হাতছাড়া। এই ওয়ার্ড যে কোনও উপায়ে দখলে রাখতেই আমাদের উপরে লাগাতার আক্রমণ করছে তৃণমূল বাহিনী।’’ যদিও স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একের পর এক হারের পরে ওদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই সিপিএম তৃণমূলের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। রবিবার রাতের ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের বিন্দুমাত্র যোগ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE