Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ক্যামেরার নজরে বরো অফিসের দালালেরা

দালাল-রাজ বন্ধে বাধ্য হয়েই তাঁরা প্রযুক্তির হাত ধরার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক হয়, প্রায় গোটা অফিস মুড়ে ফেলা হবে ক্লোজ্‌ড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায়। আর তার পরেই বদলে গিয়েছে ছবিটা। অফিসের কর্তাদের দাবি, ক্যামেরা বসিয়ে দালালদের দৌরাত্ম্যে অনেকটাই রাশ টানা গিয়েছে। এই পুরো উদ্যোগের হোতা বরো চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য।

উদ্যোগ: জোকার ডায়মন্ড পার্কের বরো অফিস।

উদ্যোগ: জোকার ডায়মন্ড পার্কের বরো অফিস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ১৫:০০
Share: Save:

বরো অফিসে কোনও কাজে গেলেই এত দিন কার্যত হামলে পড়তেন তাঁরা। তাঁদের এড়িয়ে কিছু করার উপায়ই ছিল না। ফর্ম পূরণে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া থেকে শুরু করে বিবিধ কাজের জন্য প্রকাশ্যে চলত দালালি। বহু চেষ্টাতেও তা আটকানো যাচ্ছিল না। হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিলেন বরো অফিসারেরা।

দালাল-রাজ বন্ধে বাধ্য হয়েই তাঁরা প্রযুক্তির হাত ধরার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক হয়, প্রায় গোটা অফিস মুড়ে ফেলা হবে ক্লোজ্‌ড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায়। আর তার পরেই বদলে গিয়েছে ছবিটা। অফিসের কর্তাদের দাবি, ক্যামেরা বসিয়ে দালালদের দৌরাত্ম্যে অনেকটাই রাশ টানা গিয়েছে। এই পুরো উদ্যোগের হোতা বরো চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, জোকা-ডায়মন্ড পার্কের ১৬ নম্বর বরোর অফিসে রয়েছে ট্রেড লাইসেন্স, জল সরবরাহের লাইনের আবেদন জমা নেওয়ার কাউন্টার-সহ একাধিক বিভাগ। চারতলা অফিসের একতলায় পাঁচটি কাউন্টার। তিনটি ট্রেজারির, দু’টি স্বাস্থ্য দফতরের। সূত্রের খবর, অফিস চত্বরে ১০টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ট্রেজারির কাউন্টারে প্রতিদিন যে কাজ হয়, তার ছবি ক্যামেরার মাধ্যমে চলে আসে পুরসভার সদর দফতরে। সেখান থেকে গোটা প্রক্রিয়ার উপরে নজরদারি চলে। আর স্বাস্থ্য দফতরের কাউন্টারে নজরদারি চালানো হয় ওই অফিস থেকেই।

এখানেই বসেছে সিসি ক্যামেরা।

এক কর্তা জানাচ্ছেন, এত দিন অফিসের গেট দিয়ে কোনও গ্রাহক ঢোকার পরেই তাঁদের কার্যত হাইজ্যাক করে নিত দালালদের দল। অফিস পর্যন্ত পৌঁছতে হত তাঁদের বাধা পেরিয়েই। সে জন্য কাউন্টারকে সুরক্ষিত করার পাশাপাশি বাইরের গেটেও সুরক্ষার দরকার ছিল। তাই মূল ফটক এমনকী গ্যারাজকেও ক্যামেরার নজরদারিতে আনা হয়েছে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘ক্যামেরা বসাতেই অনেকটা কমে গিয়েছে দালালদের দাপট।’’ বরো চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন, ‘‘পরিষেবা পেতে সাধারণ মানুষকে যাতে হয়রানি পোহাতে না হয়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা।’’ যদিও অফিসের কর্তাদের একাংশ এ-ও স্বীকার করছেন, দালাল-রাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।

দালালদের দাপট বন্ধ করতে একই ভাবে উদ্যোগী হয়েছিল পরিবহণ দফতরও। তাদের হাত ছাড়িয়ে বেলতলায় মোটর ভেহিক্যাল্‌স অফিসে ঢোকাই দায় হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষের। তার পরেই গোটা অফিস ক্যামেরার নজরদারিতে এনে দালালদের দাপট ঠেকানো হয়। এ বার বরো অফিসও সেই পথে হাঁটল। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার মতে, এই ক্যামেরা অনেকাংশে অপরাধীদের ধরতে সাহায্য করে। আশা করা যায়, এর ফলে বরো অফিসেও দালাল-দৌরাত্ম্য কমবে।

নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Broker Fraud Case CCTV Camera
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE