Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিবাদী ভাইবোনকে নিগ্রহ

বাসিন্দারা পুলিশের কাছে অভিযুক্ত যুবকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৫৭
Share: Save:

কয়েক জন যুবক বোনকে উত্ত্যক্ত করায় প্রতিবাদ করেছিলেন দাদা। তাতেই বেধে গেল ধুন্ধুমার। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় থাকা ওই যুবকেরা এর পরে প্রকাশ্য রাস্তায় ওই যুবক ও তাঁর তুতো বোনকে ফেলে পেটাল। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে অভিযুক্ত যুবকদের মারের থেকে নিস্তার পেলেন না ওই যুবকের প্রতিবেশীরাও। দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাঁশ, লোহার রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করে।

বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়া থানা এলাকার বেলগাছিয়ার কুঞ্জপাড়ায়। বাসিন্দারা পুলিশের কাছে অভিযুক্ত যুবকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

পুলিশ জানায়, কুঞ্জপাড়ার বাসিন্দা এক যুবক গত বুধবার রাত ৯টা নাগাদ বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে পিসতুতো বোনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সে সময়ে ওই যুবকেরা সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই দু’জনকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে। অভিযোগ, তাঁদের উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য গালিগালাজ এবং অশালীন ইঙ্গিত করে ওই যুবকেরা। এতে ওই যুবক ও তাঁর বোন দু’জনেই যুবকদের আচরণের প্রতিবাদ করেন।

ঘটনার সময় রাজু মণ্ডল ও বিশ্বজিৎ দাস নামে দুই যুবক প্রথমে তাঁদের উদ্দেশে কটূক্তি করা শুরু করে বলে পুলিশকে জানান প্রহৃত ওই যুবক। তাঁর অভিযোগ, প্রতিবাদের মুখে পড়ে অভিযুক্তেরা দাদা-বোনকে প্রথমে মারধর করা শুরু করে। দুই পক্ষের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়ি রাস্তায় বেরিয়ে আসেন স্থানীয় লোকজন। আক্রান্ত ওই যুবক ও তাঁর বোনকে বাঁচাতে গেলে ওই স্থানীয়রাও অভিযুক্তদের হাতে প্রহৃত হন। এর পরে স্থানীয়দের সঙ্গেও অভিযুক্ত যুবকদের মারামারি শুরু হয়। নিজেদের দল ভারী করতে ওই যুবকেরা ফোন করে আরও লোকজনকে ডেকে আনে। দ্বিতীয় দলটি বাঁশ, লোহার রড, ক্ষুর নিয়ে এসে কুঞ্জপাড়ার ওই বাসিন্দাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, মারধর তো বটেই, ওই যুবকেরা পাড়ার কয়েক জন মহিলাকে যৌন হেনস্থাও করে বলে অভিযোগ।

ঘটনায় গুরুতর আহত হন অমিত বসু-সহ স্থানীয় ছয় যুবক। অমিতকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। পুলিশের বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশই আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

এলাকার বাসিন্দা অঞ্জলি দাসের অভিযোগ, “ওই যুবকরা দীর্ঘ দিন ধরে সন্ধ্যার পরে মত্ত অবস্থায় পাড়ায় উপদ্রব করে। রাস্তায় মহিলাদের উত্ত্যক্ত করে। জোর করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। কেউ টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে মারধর করে। আগেও ওরা মহিলাদের মারধর করেছে।’’

মালতি বসু নামে অন্য এক মহিলার অভিযোগ, ‘‘বেশ কয়েক দিন ধরে অভিযুক্তেরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘অভিযুক্তেরা পলাতক। পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। কাউকে ছাড়া
হবে না।’’

হাওড়া পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদ ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুলিশকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলেছি। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে সব রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। দোষ করলে কেউই ছাড় পাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eve Teasing Brother Sister Protest Assault
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE