Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
New Market

নিউমার্কেটের ব্যাঙ্কের পিছনের ভাঙা দরজা দিয়ে ঢুকে, ভল্ট কেটে লুঠের চেষ্টা

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই শনিবার মাসের চতুর্থ শনিবার হওয়ায় ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। রবিবারও বন্ধ ছিল। ওই দু’দিনের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে।

এই ব্যাঙ্কেই ভল্ট কেটে লুঠের চেষ্টা হয়। নিজস্ব চিত্র।

এই ব্যাঙ্কেই ভল্ট কেটে লুঠের চেষ্টা হয়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ১৬:২৬
Share: Save:

ব্যাঙ্কের ভল্ট কেটে লুঠের চেষ্টা করল দুষ্কৃতীরা! ঘটনাটি ঘটেছে জনবহুল নিউমার্কেটের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায়। ৫ নম্বর লিন্ডসে স্ট্রিটের দোতলায় ওই ব্যাঙ্কটির শাখা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে ব্যাঙ্কের মূল দরজা অন্যদিনের মতোই খুলে ঢোকেন কর্মীরা। তারপরই তাঁরা ভল্টের সামনে গিয়ে দেখেন, ভল্টের একাংশ কাটা হয়েছে গ্যাস কাটার জাতীয় কোনও জিনিস দিয়ে।

তাঁরা প্রথমে ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তারপর খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। নিউমার্কেট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পৌঁছন ডিসি (মধ্য বিভাগ) নীলকণ্ঠ সুধীর কুমার। তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই শনিবার মাসের চতুর্থ শনিবার হওয়ায় ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। রবিবারও বন্ধ ছিল। ওই দু’দিনের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। তদন্তকারীদের দাবি, ব্যাঙ্কের সামনের দরজা দিয়ে ঢোকেনি দুষ্কৃতীরা। সেই দরজা এবং তার সমস্ত তালা অক্ষত রয়েছে। ব্যাঙ্কের পিছনের দিকেও একটা দরজা রয়েছে। তদন্তে দেখা গিয়েছে, সেই দরজা অত্যন্ত দুর্বল এবং সেটি ঠিক ভাবে বন্ধও হয় না। তদন্তকারীদের দাবি, গোটা ব্যাঙ্কে কোনও কিছু ভেঙে ঢোকার চিহ্ন নেই। প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দাদের সন্দেহ পিছনের দরজা কোনও ভাবে ঠিক ঠাক বন্ধ ছিল না। সেই দরজা ব্যবহার করেই ব্যাঙ্কে ঢুকেছে দুষ্কৃতীরা।

আরও পড়ুন: বেসরকারি বাস-মিনিবাস উধাও, বাদুড়ঝোলা ভিড় সরকারি বাসে, চরম দুর্ভোগ যাত্রীদের

আরও পড়ুন: ‘বাবা আমি শ্বাস নিতে পারছি না, ওরা ভেন্টিলেটর সরিয়ে দিয়েছে’, কোভিড রোগীর শেষ ভিডিয়ো ভাইরাল

ভিতরে ঢুকে তারা মার্বেল কাটার যন্ত্র দিয়ে ভল্ট কাটা শুরু করে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ভল্টের কাটার ধরন দেখে তাঁরা নিশ্চিত মার্বেল কাটার দিয়ে ভল্ট কাটা হয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে ভল্টের দু’টি অংশ। যে অংশ দুষ্কৃতীরা কাটতে পেরেছে সেই অংশে বড় অঙ্কের টাকা বা সোনাদানা কিছু ছিল না। ওই অংশে কিছু খুচরো পয়সা রাখা ছিল। কিন্তু মূল অংশ অর্থাৎ যেখানে টাকা এবং সোনা ছিল সেই অংশ অক্ষত থাকায় বড় কিছু খোয়া যায়নি বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

তবে প্রাথমিক তদন্তের পর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বেশ কিছু খামতি উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। এক তদন্তকারীর ইঙ্গিত, ব্যাঙ্কের ভিতরে সিসি ক্যামেরা থাকলেও বিশেষ কিছু লাভ হয়নি। কারণ গোটা ব্যাঙ্ক সিসি ক্যামেরা গুলির নজরদারির আওতাধীন নয়। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ, সিসি ক্যামেরার তার কেটে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু তার কাটা ছিল না ব্যাঙ্কের বিদ্যুতের লাইন বন্ধ ছিল তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তদন্তকারীরা। ক্যামেরাগুলি মোশন সেন্সর ক্যামেরা বলে জানা গিয়েছে। প্রতিটি ব্যাঙ্কের ভিতরেই অ্যালার্ম থাকে। ভল্ট কাটার চেষ্টা হওয়ার পরও সেই অ্যালার্ম বাজল না কেন, সেটাও প্রশ্ন তদন্তকারীদের।

অন্যদিকে প্রতিটি থানার একটি বিশেষ টহলদারি দল থাকে যাঁরা থানা এলাকার ব্যাঙ্কগুলিতে নজর রাখে। তাঁদের নজর এড়িয়ে দুষ্কৃতীরা ঢুকল কী করে? কারণ তদন্তকারীদেরই একাংশ জানাচ্ছেন, যে ভাবে লুটেরারা ঢুকেছে এবং ভল্ট কাটার চেষ্টা করেছে তাতে অনেকটা সময় লেগেছে। তারপরও কী ভাবে তারা সবার নজর এড়িয়ে গেল? তা ছাড়া মার্বেল কাটার যন্ত্র দিয়ে কাটলে প্রচন্ড আওয়াজ হয়। সেই আওয়াজ কেউ শুনতে পেল না কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তদন্তকারীরা। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি।” এর আগেও নেতাজি নগরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে একই ভাবে সিঁধ কেটে ঢুকে ভল্ট কাটার চেষ্টা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, এর পিছনে ঝাড়খণ্ডের কোনও গ্যাং যুক্ত রয়েছে। তদন্তকারীদের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশি গ্যাংও।

লালবাজার সূত্রে খবর, এই ঘটনার পরই প্রতিটি ডিভিশনের ডিসিদের বলা হয়েছে, এলাকায় থাকা সমস্ত ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New Market Dacoity Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE