Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

মেডিক্যালে অনশনে অসুস্থ দেবাশিস, উদ্বিগ্ন গীতালদহ

কোচবিহার জেলার এক প্রত্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকা গীতালদহের বাসিন্দা দেবাশিস। এ বারে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। হস্টেলের দাবিতে অন্যান্য পড়ুয়াদের সঙ্গে টানা অনশনে বসেছিলেন দেবাশিস। তার পর ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর অসুস্থতার খবরে মা-বাবা দুজনেই ছুটে যান কলকাতায়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গীতালদহ   শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০২:২৮
Share: Save:

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছেলে দেবাশিসের জন্য গর্ব অনুভব করছেন তাঁর মা। তাঁর মা ললিতা বর্মনের কথায়, “এখন তো কেউ নিজের কথাই ভাবে না। আমার ছেলে সেখানে সবার কথা ভেবে আন্দোলনে নেমেছে। অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মা হিসেবে কষ্ট পেয়েছি। তার পরেও গর্ববোধ করছি।”

কোচবিহার জেলার এক প্রত্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকা গীতালদহের বাসিন্দা দেবাশিস। এ বারে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। হস্টেলের দাবিতে অন্যান্য পড়ুয়াদের সঙ্গে টানা অনশনে বসেছিলেন দেবাশিস। তার পর ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর অসুস্থতার খবরে মা-বাবা দুজনেই ছুটে যান কলকাতায়। শনিবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় দেবাশিসকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর মা ললিতাদেবী এদিন ছেলের পাশেই ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি বলেন, “ছেলে আজ অনেকটা ভাল। হাসপাতালে ওর চিকিৎসা চলছে।” বাবা অমলেশবাবুও ছেলের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

শুধু তাঁর মা, বাবা অমলেশবাবু থেকে শুরু করে দিনহাটা থেকে শুরু করে কোচবিহারের প্রত্যেকেই ওই পড়ুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। বাবাও ছেলের জন্য গর্ববোধ করছেন বলেই জানিয়েছেন। গীতালদহ ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের আমিনুর হক বলেন, “ওই ছেলেকে আমরা ছোটবেলা থেকেই চিনি। তাঁর মধ্যে একটা প্রতিবাদী চরিত্র আছে। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করে। তাঁর কথা গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।”

নাট্য অভিনেতা ও পরিচালক কল্যাণময় দাশ থেকে শুরু করে চিত্রশিল্পী শ্রীহরি দত্ত প্রত্যেকেই ওই ছাত্রের পাশে দাড়িয়েছেন। কল্যাণবাবু বলেন, “দেবাশিস আমাদের জেলার ছেলে। তাঁর প্রতিবাদ মনে রাখার মতো। অন্যায়ের প্রতিবাদ এমন ভাবেই হওয়া উচিত। ওঁদের দাবি যুক্তিসঙ্গত। কেন এটা এতদিন ধরে দেখা হচ্ছে না বুঝতে পাচ্ছি না।” শ্রীহরি বলেন, “জেলার একজন ছাত্র ন্যায়ের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন, তা দেখে আমরাও গর্বিত। তাঁর ও মেডিক্যালের পড়ুয়াদের পাশে আমরা আছি।”

ললিতাদেবী স্বাস্থ্যকর্মী। অমলেশবাবুর ছোট্ট ব্যবসা রয়েছে। তাঁদের এক সন্তান। এলাকার বাসিন্দারা জানান, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল দেবাশিস। সেই ছেলে ডাক্তারি পড়তে কলকাতায় যাওয়ায় খুশি ছিলেন সবাই। হঠাৎ করে অনশনের কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েন সবাই। গত ১৮ জুলাই তাঁর মা-বাবা পৌঁছন কলকাতায়। সেই থেকে ছেলের পাশেই ছিলেন। শনিবার অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় মন খারাপ যায় তাঁদের। মন খারাপ হয় কোচবিহারেরও। এদিন তাঁর কিছুটা সুস্থতার খবর পেয়ে সেই অবস্থা কেটেছে। ললিতাদেবী বলেন, “বহু মানুষ পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবারে সমস্যা মিটবে বলে আশা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE