Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হস্টেলের সুপার চাই, কিন্তু ‘সিঙ্গল’ হতে হবে!

ছাত্র ও ছাত্রীদের হস্টেলের জন্য সুপার নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চাকরিপ্রার্থীর বয়স হতে হবে ৪০ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। তাঁর থাকার জন্য হস্টেলের ক্যাম্পাসেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। থাকা এবং খাওয়া বিনামূল্যে। তবে সেখানে তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য বা অতিথিকে থাকতে দেওয়া হবে না। রয়েছে আরও কিছু শর্তও।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

মধুমিতা দত্ত ও সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৯
Share: Save:

পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক হস্টেল সুপারিনটেন্ডেন্ট খুঁজছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে তাঁকে হতে হবে ‘সিঙ্গল’ অর্থাত্ অবিবাহিত বা বিবাহবিচ্ছিন্ন! বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেওয়া এই বিজ্ঞপ্তি দেখে বিস্মিত শিক্ষামহলের একাংশ।

ছাত্র ও ছাত্রীদের হস্টেলের জন্য সুপার নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চাকরিপ্রার্থীর বয়স হতে হবে ৪০ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। তাঁর থাকার জন্য হস্টেলের ক্যাম্পাসেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। থাকা এবং খাওয়া বিনামূল্যে। তবে সেখানে তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য বা অতিথিকে থাকতে দেওয়া হবে না। রয়েছে আরও কিছু শর্তও।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নিয়ম কস্মিনকালেও নেই বলে জানালেন উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা। তিনি জানান, এমন কোনও নিয়ম উচ্চশিক্ষা দফতরের নেই। সবচেয়ে বড় কথা, কোনও ভারতীয় নাগরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ক্ষেত্রে বিবাহিত, অবিবাহিত, একক অথবা সমকামী হবেন তা বলার অধিকারও কারও নেই। তা-হলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কেন এমন নিয়ম চালু করতে চাইছে? তা জানতে উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন ও মেসেজ করা হলেও তাঁর মতামত পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এই শর্তের বিষয়টি মাস কয়েক আগে সিন্ডিকেটেই পাশ হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিন্ডিকেট সদস্য জানান, নিয়োগের ক্ষেত্রে কী কী শর্ত থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। ‘অবিবাহিত’ প্রসঙ্গটিও আলোচনা হয়েছিল। কেউ আপত্তি না করায় বিষয়টি সিন্ডিকেটে পাশ হয়ে যায়। কিন্তু অবিবাহিত হলে বাড়তি কী সুবিধা হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, পূর্ণ সময়ের সুপারের যাতে কোনও ‘পারিবারিক টান’ না থাকে, তার উপরেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এ-ও জানানো হয়েছে, সুপারকে যে ঘর দেওয়া হবে, সেখানে কোনও পরিবার বা অতিথিকে থাকতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রের যুক্তি, ‘সিঙ্গল’ না হলে এই শর্ত পূরণ অসম্ভব।

বিতর্কিত: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তির অংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন কুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থিব বসুর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই বিজ্ঞপ্তি হাস্যকর। আর কিছু বলব না।’’ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক অভিজিৎ কুন্ডু বলেন, ‘‘যে আধিকারিক এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন, তাঁর যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালানোর যোগ্যতা নেই, সেটা পরিষ্কার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE