Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী

সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-অপারেটিভ সোসাইটির টাকা গরমিলের তদন্তে নেমে ভুয়ো শংসাপত্রধারী কর্মীর খোঁজ মিলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫১
Share: Save:

স্কুলের প্রতিষ্ঠা হয়েছে যে বছর, সে বছর ওই স্কুল থেকেই অষ্টম শ্রেণিতে পাশ করেছিলেন তিনি! রয়েছে সেই শংসাপত্রও। যেটি দেখিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে ৩২ বছর চাকরিও করে গিয়েছেন!

সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-অপারেটিভ সোসাইটির টাকা গরমিলের তদন্তে নেমে এমনই ভুয়ো শংসাপত্রধারী কর্মীর খোঁজ মিলেছে। তাঁর মতোই আরও দুই কর্মীর হদিস পাওয়া গিয়েছে। দোষ প্রমাণিত হওয়ায় স্থায়ী চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁদের। তবে মানবিক কারণে তাঁদের অস্থায়ী পদে রেখে দেওয়া হয়েছে।

উঠে এসেছে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও। বিভাগীয় তদন্তের রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে, সি ইউ স্টাফ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অফিসার এবং সাধারণ কর্মী মিলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশো জন এই সোসাইটির সদস্য। রিপোর্টে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০০১-’১৬ সাল পর্যন্ত সোসাইটিতে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় কয়েক কোটি টাকা। লক্ষাধিক টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করা থাকলেও মেয়াদ শেষের পরে সেগুলি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। তার কোনও হদিসও নেই। কো-অপারেটিভ থেকে পেনশন নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও প্রতি বছর ছ’লক্ষ টাকা করে পেনশন তোলা হয়েছে। কোনও অনুষ্ঠানে প্রায় চার লক্ষ টাকার উপহার কেনা হলেও তার দরপত্র ডাকা হয়নি। এই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে সোসাইটির প্রাক্তন সম্পাদক তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী দিলীপ ঘোষের। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাঁর অবসরকালীন সমস্ত টাকাও আটকে দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, গত জুনে সরকার একটি তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে, সেখানেও সোসাইটির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অসঙ্গতির উল্লেখ করা হয়। তার পরে সোসাইটির বিভাগীয় তদন্ত রিপোর্টে আর্থিক দুর্নীতির তত্ত্ব সামনে আসে। প্রসঙ্গত, কয়েক বছর আগে তৎকালীন ফিনান্স অফিসারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। ফের আর্থিক দুর্নীতিতে ওই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মীর নাম জড়ানোয় বিতর্ক শুরু হয়েছে।

অভিযুক্ত দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘এ সব মিথ্যে। আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অভিযোগ আনা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের রিপোর্টে কোথাও জানায়নি যে আমার দোষ রয়েছে।

তা সত্ত্বেও আমার অবসরকালীন টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে। আমি অসুবিধায় রয়েছি।’’ সোসাইটির সম্পাদক শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্তে আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। এই তদন্তের জন্য আমাকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছি। সংবাদমাধ্যমকে এর থেকে বেশি কিছু বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Worker Calcutta University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE