Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Consumer Court

কোভিডের জেরে কোর্টে বার বার পিছোচ্ছে শুনানি, চলছে হয়রানি

ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের তিনটি বেঞ্চ রয়েছে। গত মার্চের শেষের দিক থেকে দীর্ঘ দিন ওই তিনটি বেঞ্চ বন্ধ ছিল।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৫৬
Share: Save:

কোভিড অতিমারির জেরে কখনও আদালতে শুনানি হচ্ছে না। কখনও আবার মামলার এক পক্ষ হাজির না থাকায় বার বার শুনানির দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-কালে ক্রেতা সুরক্ষা ভবনে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বর্তমান অবস্থা এখন এমনই।

ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের তিনটি বেঞ্চ রয়েছে। গত মার্চের শেষের দিক থেকে দীর্ঘ দিন ওই তিনটি বেঞ্চ বন্ধ ছিল। আনলক-ওয়ান পর্বে শর্তসাপেক্ষে আদালত চালু হলেও এখনও পর্যন্ত ওই কোর্টে শুনানি ঠিকঠাক হচ্ছে না। কখনও কখনও আবার মামলার এক পক্ষ অনুপস্থিত থাকায় বিচারক চূড়ান্ত রায় দিতে পারছেন না।

যেমন, মানিকতলা গৌড়ীয় মঠের সম্পাদক গোবিন্দ মহারাজ জানাচ্ছেন, তাঁদের মঠে লিফট বসানোর জন্য অকটু সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সংস্থা প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা নিলেও লিফট বসায়নি মঠের তরফে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। জেলা আদালত ওই সংস্থাকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিলেও সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যায় ওই সংস্থা। মঠের তরফে গোবিন্দ মহারাজের অভিযোগ, ‘‘গত সাত মাসে রাজ্য আদালতের শুনানিতে আমরা পাঁচ বার হাজির হয়েছি। কিন্তু অপর পক্ষ হাজির না হওয়ায় বিচারক শুনানির দিন বার বার পিছিয়ে দিচ্ছেন। করোনাকে ঢাল করে অপর পক্ষ ইচ্ছে করেই কোর্টে আসছে না।’’

প্রসঙ্গত আনলক-ওয়ান পর্বে শর্তসাপেক্ষে আদালত চালু হওয়ার পরে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বিচারকদের উদ্দেশে চিঠি লিখে আবেদন জানানো হয়েছিল, কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দু’পক্ষ হাজির থাকলে তবেই চূড়ান্ত রায় যেন দেওয়া হয়। বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা এবং রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলাকারী দুর্বার ঘোষ বলেন, ‘‘আমার এত দিনে চূড়ান্ত রায় পেয়ে যাওয়ার কথা। গাড়ি ভাড়া করে তিন বার কলকাতা গিয়েও কাজ হয়নি। অন্য পক্ষ আদালতে হাজির না থাকায় বিচারক শুনানির দিন পিছিয়ে দিচ্ছেন।’’

এমনিতে প্রাক্‌ কোভিড যুগে প্রতিদিন রাজ্য সুরক্ষা আদালতে গড়ে ৫০-৬০টি মামলা তালিকাভুক্ত হত। কিন্তু এখন নতুন মামলা হওয়া তো দূরের কথা, পুরনো মামলার ঠিকঠাক শুনানি না হওয়ায় বিপাকে পড়ছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা মামলাকারীরা। রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিরন্ময় ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘করোনার কথা মাথায় রেখে গত অগস্টে বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বিচারকদের কাছে আর্জি জানিয়ে বলা হয়েছিল, মামলায় উভয় পক্ষ বা তাঁদের আইনজীবী না এলে যেন চূড়ান্ত রায় না দেওয়া হয়। তবে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। এই পরিস্থিতিতে বিবাদী পক্ষ কোভিডের অজুহাতে বার বার শুনানির জন্য কোর্টে না এলে তা কাম্য নয়। এ বিষয়ে সমস্ত বিচারককে চিঠি লিখে জানাব।’’ তবে এই দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ড বলছেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Consumer Court Coronavirus in west bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE