কয়েক মাস পরেই ছোট মেয়ের বিয়ে। সেই জন্য মাঝেমধ্যেই সুযোগ-সুবিধা মতো সোনার গয়না কিনে বাড়ির আলমারিতেই রেখে দিতেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা দুলালচন্দ্র ভট্টাচার্য। বুধবার সকালে স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে তিনি একটি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন কলকাতায়। রাতে বাড়ি ফিরে তাঁরা দেখলেন, সদর দরজার তালা ভাঙা। সমস্ত ঘর লন্ডভন্ড। আলমারির দরজা ভেঙে ভিতর থেকে চুরি হয়ে গিয়েছে সমস্ত গয়না এবং নগদ কয়েক হাজার টাকা।
দিনেদুপুরে বেলঘরিয়ার মতো এলাকায় এই চুরি সেখানকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিল। পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের অবশ্য অনুমান, ওই পরিবারের খুব পরিচিত কেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত, এটা বাইরের কোনও চোরের কাজ নয়। পুরো ঘটনার সঙ্গে ওই পরিবারের খুব পরিচিত কেউ জড়িত রয়েছেন।
যে কারণে তাঁকে বাড়ির সামনে দেখলেও কেউ সন্দেহ করেননি।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলঘরিয়ার আদর্শপল্লি দেশপ্রিয় নগরের বাসিন্দা দুলালচন্দ্রবাবু কলকাতা ট্রাম কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। তাঁর স্ত্রী উমা ভট্টাচার্য পেশায় গৃহশিক্ষিকা। ছোট মেয়ে দেবাঞ্জনা একটি বিদেশি সংস্থায় কর্মরত। বুধবার সকালে তাঁরা আলিপুরে দুলালবাবুর এক বন্ধুর বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি ফিরে দুলালবাবুরা দেখেন, তাঁদের বাড়ির সদর দরজা অল্প ফাঁক করা। ভাঙা তালা পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি ভিতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, ঘরের দরজাও খোলা। ভিতরে আলমারির পাল্লা ভেঙে জিনিসপত্র তছনছ করা হয়েছে। সেখানেই রাখা ছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার সোনার গয়না ও নগদ কয়েক হাজার টাকা। আলমারির সামনে পড়ে ছিল সাঁড়াশি ও শিলনোড়া। পুলিশের অনুমান, ওই সাঁড়াশি ও শিলনোড়া দিয়েই আলমারির পাল্লা ভাঙা হয়েছে।
দুলালবাবুর বড় মেয়ে দোয়েল বন্দ্যোপাধ্যায় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আগামী জানুয়ারিতেই আমার বোনের বিয়ে। তাই বাবা অল্প অল্প করে ওর বিয়ের জন্য সোনার গয়না কিনে রাখছিলেন। এ ভাবে যে সব গয়না চুরি হয়ে যাবে, তা ভাবতেই পারছি না।’’ দুলালবাবু জানিয়েছেন, আলমারিতে তিনি পেনশনের কয়েক হাজার টাকা রেখেছিলেন। সেটাও গয়নার সঙ্গে চুরি হয়ে গিয়েছে। বড় রাস্তার উপরে বাড়ি হওয়া সত্ত্বেও দরজার তালা ভাঙার সময়ে আশপাশের কেউ কেন কিছু টের পেলেন না, তা-ও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy