ফাইল চিত্র।
আবাসিকদের এ বার গো-পালন প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হল কিশলয় হোমে।
রাজ্যের শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই প্রশিক্ষণ। আপাতত পোষ্য হিসেবে কী ভাবে গরুর পরিচর্যা করতে হয় তারই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে হোমের ২০ জন আবাসিককে। এর জন্য আনা হয়েছে ২০টি জার্সি গরু। ভবিষ্যতে এই গরুগুলি যে দুধ দেবে তা প্রথমে হোমের আবাসিকদের জন্য রাখা হবে। পরে বাড়তি দুগ্ধ উৎপাদন হলে তা কো-অপারেটিভের মাধ্যমে বাইরে বিক্রি করা হবে। হোম সূত্রের খবর, আপাতত ওই কো-অপারেটিভের একটি নামও ভাবা হয়েছে— কিশলয় প্রাক্তনী সমবায় সমিতি।
দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গা থেকে শিশু-কিশোরদের উদ্ধার করে এনে এই হোমে রাখা হয়। যাদের বাড়ি এবং পরিবারের খোঁজ মেলে তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু অনেকের পরিবারের কোনও খোঁজ মেলে না। তখন তারা হোমেই থেকে যায় এবং ১৮ বছর বয়সের পরে ফের আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। মানবিকতার খাতিরে অনেককে হোমেই রেখে দেওয়া হয় এবং হোমের কাজে তাঁদের নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু
এমন আবাসিকদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে তাঁদের আর হোমে রাখা সম্ভব হয় না। অথচ বাইরে বেরিয়েও তাঁদের কাজ পাওয়ার কোনও নিশ্চয়তা থাকে না। এই প্রকল্পে সেই আবাসিকেরা বাইরে থেকে এসেও কাজ যোগ দিতে পারবেন। এতে তাঁদের একটা আয়ের পথ খুলে যাবে এবং মূলস্রোতের মানুষদের মতোই জীবন নির্বাহ করতে পারবেন।
রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে ‘ন্যাশনাল লাইভলিহুড মিশন’-এর আওতায় এই গো-পালনের প্রকল্পের জন্য টাকা মিলেছিল। সেই টাকা ব্যয় করে কী ভাবে কিছু ছেলের জীবিকার সুযোগ করে দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়। তখনই রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর ঠিক করে, কিশলয় হোমের আবাসিকদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ১৬ বছরের বয়সের উর্ধ্বে যে আবাসিকেরা রয়েছেন, তাঁরা ভবিষ্যতেও এই প্রকল্পে সুবিধা পাবেন বলে ঠিক হয়। তার পরেই উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসককে বিষয়টি জানায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর। দু’পক্ষের আলোচনায় ঠিক হয়, দফতর আপাতত ২০টি গরু কিনে আবাসিকদের দেবে। কী ভাবে গরুর পরিচর্যা করতে হবে তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। বছরখানেক পরে গরুগুলির বয়স আড়াই হলে কো-অপারেটিভের মাধ্যমে দুধ বিক্রি করে লভ্যাংশ আবাসিকদের দেওয়া হবে। এমনকি, ১৮ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পরে আবাসিকেরা অন্যত্র গেলেও এই প্রকল্পের মাধ্যমে রোজগার করতে পারবেন। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্যের কথায়, ‘‘হোম থেকে কেউ বাড়ি ফিরে গেলে বা পরে হোম ছা়ড়লেও এই কো-অপারেটিভের মাধ্যমে তারা উপকৃত হবে। ফলে তাদের ভবিষ্যতও নিশ্চিত হবে।’’
শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রায় সব হোমের আবাসিকদের স্বনির্ভর হওয়ার এবং জীবিকাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। তেমনই কিশলয় হোমে অন্য প্রশিক্ষণের পাশাপাশি শুরু হয়েছে এই গরু প্রতিপালন প্রকল্পও। এই প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে আরও কিছু প্রকল্প একসঙ্গে চালু করার প্রস্তাব রয়েছে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy