শিশুদের শিল্পদুনিয়ায় আমরা-ওরা নেই। গত এক মাস ধরে মডার্ন হাই স্কুলের মেয়েরা কখনও তপসিয়া বস্তিতে ছবি এঁকেছে, কখনও বা তাদের নিয়ে অনুষ্ঠান। ময়রা স্ট্রিটের বিড়লা হাই স্কুলের ছেলেরাও স্থানীয় দরিদ্র শিশুদের সঙ্গে নিয়ে স্কুলের দেওয়ালে ছবি এঁকেছে। পার্ক স্ট্রিটের অ্যাপিজে স্কুলের ছেলেরা দেওয়ালে এঁকেছে ঘোড়ায় টানা ট্রাম। ‘‘আমাদের লাইব্রেরিতেও পথশিশুরা ভাল কাজ করছে,’’ বলছিলেন সেখানকার এক শিক্ষক।
গত এক মাস কলকাতার ১৫ স্কুলে এ ভাবেই ঘুচে গিয়েছিল যাবতীয় বৈষম্য। উপলক্ষ সিমা অ্যাওয়ার্ড ও ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স-এর যৌথ উদ্যোগে ‘কানেক্টিং হিস্ট্রিজ: কলকাতা অ্যান্ড দ্য ওয়র্ল্ড’ নামে প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতা উপলক্ষে স্কুলের দেওয়ালে ঘোড়ায় টানা ট্রাম থেকে ভলভো বাস, মেট্রো ট্রেন এঁকে, এই শহরের গতিময়তার ইতিহাস ছুঁয়ে গিয়েছিল পার্ক স্ট্রিটের অ্যাপিজে স্কুল। সল্ট লেকের অ্যাপিজে স্কুল আবার কেষ্টপুর খালের ফুট ব্রিজের নীচে ইনস্টলেশন তৈরি করে দ্বিতীয় স্থানে। তাদের সঙ্গেই দ্বিতীয় স্থানে আরও দুই স্কুল: মহাদেবী বিড়লা ও সিলভার পয়েন্ট। বৃহস্পতিবার বিকেলে ডোভার পার্কের এক বাড়িতে এই সব স্কুলের ছেলেমেয়েদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন সিমার কর্ণধার রাখী সরকার। ‘‘স্কুল তো আর শুধু শেক্সপিয়র বা রবীন্দ্রনাথ মুখস্থ করার জন্য নয়। মনের দরজা, জানালাগুলি খুলতে শেখার জন্য,’’ বললেন তিনি।
এই স্কুলের ছেলেমেয়েরাই অন্য শহরের দ্বিবার্ষিক শিল্প উৎসবের সঙ্গে কলকাতার তফাত গড়ে দিয়েছে, মনে করছেন আদিত্য বসাক। ‘‘কোচি, সাংহাই কিংবা ভেনিসের বায়েনিয়েল শুধু প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের জন্য। সিমা তার অ্যাওয়ার্ড শোতে বা তার সমান্তরাল অনুষ্ঠানে তরুণ, কচিকাঁচাদের গুরুত্ব দিয়ে অন্য মাত্রা নিয়ে এসেছে,’’ বলেছেন তিনি। বাচ্চারাই তো যাবতীয় বিভাজনরেখা ভেঙে শহরকে ফের দেখতে শেখাল অন্য চোখে। কেষ্টপুর ও সল্টলেককে নিয়ে এল এক শিল্পবীথিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy