অঙ্কিতা দেব
দিন কয়েক আগে স্কুলে যাওয়ার পথে স্থানীয় দু’জনের হাতে আক্রান্ত হয়েছিল সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মুখে আঘাত করা হয়। রবিবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে মারা গেল অঙ্কিতা দেব (১৩) নামে ওই কিশোরী।
পুলিশ জানায়, সোনারপুর থানার চম্পাহাটির হোসেনপুরে বাড়ি ছিল অঙ্কিতাদের। ৭ জানুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যখন সে স্কুলে যাচ্ছে, সে সময়ে মাঝরাস্তায় তার উপরে চড়াও হয় দু’জন। অস্ত্রের আঘাতে মুখের এক পাশের মাংস প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল অঙ্কিতার। ঘটনার পর থেকেই সে অচৈতন্য ছিল। তার পরিবারের তরফে সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে, পুলিশ ওই ঘটনায় বুবাই হালদার নামে এক যুবক এবং এক নাবালককে গ্রেফতার করে। ধৃত ওই নাবালকের সঙ্গে ছাত্রীটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে জেনেছে পুলিশ। ছাত্রীকে আঘাতের ঘটনায় তার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা জানান, ওই দিন সকালে সাইকেল নিয়ে দুই বান্ধবীর সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল অঙ্কিতা। সে দিনই সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণির পরীক্ষা পাশের মার্কশিট নিতে ভুলে যাওয়ায় মাঝরাস্তা থেকেই সে বাড়ি ফিরে আসে। মার্কশিট নিয়ে কিছুক্ষণ পরে সাইকেলে চেপেই স্কুলের দিকে রওনা দিয়েছিল। মাঝপথে ওই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়েরা অঙ্কিতাকে ছুরি মারা হয়েছে বলে তার বাড়িতে খবর দেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে প্রথমে এলাকার একটি নার্সিংহোমে এবং পরে সেখান থেকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়।
রবিবার রাতে অঙ্কিতার দেহ তার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তার মা বিশাখা বলেন, ‘‘দোষীদের চরম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ ওই ঘটনার পরে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটায় আতঙ্কিত অঙ্কিতার সহপাঠীরাও। তাদের অভিভাবকেরাও উদ্বেগে রয়েছেন। তাঁরা জানান, সাধারণত ওই এলাকায় দল বেঁধে তাঁদের মেয়েরা স্কুলে যায়। নিজেদের আতঙ্কের কথা পুলিশকে জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। এলাকায় স্কুলের সময়ে নজরদারি রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর জেলা পুলিশের এক কর্তা। ওই ঘটনা ঘিরে এ দিন এলাকায় মোমবাতি মিছিলও হয়।
পুলিশ জেনেছে, ওই নাবালকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও ইদানীং অঙ্কিতা সেই সম্পর্ক রাখতে চাইছিল না। পুলিশের অনুমান, সেই আক্রোশেই ওই সকালে তাকে একা পেয়ে ওই কিশোর হামলা চালায়। যদিও তদন্তকারীরা জানান, ধৃত নাবালক এখনও ঘটনার কথা স্বীকার করেনি। অন্য যুবকটিকে জেরা করেও তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি বলেও দাবি তদন্তকারীদের। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে দাবি
করেছেন পুলিশকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy