বাছাই। কলেজ স্কোয়্যারের বইমেলার ক্রেতারা। নিজস্ব চিত্র
নববর্ষের আমেজে একটা ‘ফাউ’ বইমেলা এবং ‘ছাড়ের’ ছড়াছড়ি। বারুইপুর থেকে বইপাড়ায় টেনে আনার জন্য এটুকু খবরই যথেষ্ট সৌমী ঘোষের কাছে। সোমবার, বৈশাখী বিকেলে গোলদিঘির ধারে বইমেলায় ঘুরছেন আনকোরা ডাক্তার ওই তরুণী।
তবে মেয়ের পড়ার বই কিনতে আসা বেলেঘাটার সীমা মণ্ডল বা কেষ্টপুরের দোলন সেনগুপ্তেরা জানতেনই না, গোলদিঘি ঘিরে বইমেলা বসেছে। কলেজ স্কোয়্যারে ঢুকে চমৎকৃত তাঁরা। গত বছরের নোটের চোট কাটিয়ে বই কারবারকে খানিক লাভের মুখ দেখাতে নববর্ষের আমেজে এই খুদে মেলা-কাম-বই উৎসবই দাওয়াই পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের।
নোটের চোট কোনওমতে সামলানো গিয়েছিল বইমেলায়। তবে বই বিক্রির হার বাড়েনি। তাই পয়লা বৈশাখে নতুন বই প্রকাশের রীতি ও বইপাড়ায় লেখক-পাঠক সমাগমের ধারা মেনেই গিল্ড জোর দিচ্ছে বই-উৎসবে। অনেকেই ২০-৩০ শতাংশের উপরে ছাড় দিচ্ছেন। কিন্তু দোকানের ভাড়া বা আনুষঙ্গিক খরচ মিটিয়ে লাভের বহর কতটা, তা নিয়ে ভিন্ন সুর বই কারবারিদের। বইপাড়ায় দোকান নেই, এমন কিছু প্রকাশক কিন্তু ন’দিনের মেলায় কলেজ স্ট্রিটে নিজেদের নামে স্টল বসাতে পেরে খুশি। বাংলাদেশি বইয়ের বিক্রেতা নয়া উদ্যোগ-এর স্টল বলতে শ্রীমানি মার্কেট। মেলায় লাভই হচ্ছে তাদের। বিজয়গড় থেকে বইপাড়ায় এসে খুশি ভাষাবন্ধন-ও। সকলেই স্থানমাহাত্ম্যের গুণ গাইছেন। সমাজবীক্ষার নানা বইয়ের প্রকাশক অবভাস ও সেরিবান-এর এমনিতে বইপাড়ায় অফিস থাকলেও দোকান নেই। খুশি তারাও। তবে ছোট প্রকাশকেরা কেউ কেউ তত আত্মবিশ্বাসী নয়। স্টলের খরচ, দামে ছাড় মিটিয়ে কতটা লাভ হবে, তাঁরা নিশ্চিত নন।
অনুষ্টুপ-এর সম্পাদক অনিল আচার্যের কথায়, ‘‘মেলাকে জনপ্রিয় করতে আরও প্রচার দরকার ছিল।’’ বইপাড়ায় দোকান আছে, সপ্তর্ষির মতো এমন কিছু প্রকাশক স্টল দেয়নি। বড় প্রকাশকেরা অবশ্য খুশি বিক্রিতেই। নোটের চোটের পরে এটা ঘুরে দাঁড়ানো হিসেবে দেখছেন দে’জ প্রকাশনীর অপু দে। আনন্দ-এর সুবীর মিত্র বলছিলেন, ‘‘বিকেল-সন্ধেয় ভালই ভিড় হচ্ছে।’’
আজ, বুধবার মেলার শেষ দিন। গিল্ড-কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘নববর্ষের এই পার্বণে আগে কয়েক বার ছে়দ পড়েছে। নিয়মিত বই-উৎসব হলে বইমেলার মতো এখানেও ক্রেতার অভাব হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy