অঘটন: দুর্ঘটনায় আহত এক পড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র
বিধাননগরে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ শুরু হল বৃহস্পতিবার। সকালে সাইকেল মিছিল করে সচেতনতার প্রচার করল পুলিশ। তার কয়েক ঘণ্টা পরে বিকেলে নিউ টাউনে দুর্ঘটনায় পড়ল একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের গাড়ি। তখন চার-পাঁচ জন পড়ুয়া ছিল গাড়িতে। সকলেরই অল্পবিস্তর চোট লাগে। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় হাসপাতালে জখমদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সল্টলেকের ওই স্কুল ছুটির পরে ১৪ জন পড়ুয়াকে নিউ টাউনে পৌঁছতে যাচ্ছিল গাড়িটি। বেশ কয়েক জনকে নামিয়ে দেওয়ার পরে ঘটে দুর্ঘটনাটি। পুলিশ জেনেছে, এ দিন বিকেল ৩টে ৪০ মিনিট নাগাদ নিউ টাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছে স্কুলগাড়ির ধারে ধাক্কা মারে উল্টো দিক থেকে আসা নিউ টাউন-ধূলাগড় রুটের একটি বেসরকারি বাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানায়, পড়ুয়াদের গাড়িটি নিউ টাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছে পুরনো জলের ট্যাঙ্কের দিক থেকে পুরনো থানার দিকে যাচ্ছিল। ওই রাস্তায় সিগন্যাল তখন বন্ধ ছিল। কিন্তু বেসরকারি রুটের বাসের চালক সার্ভিস রোড ধরে ওই মোড় পেরোনোর চেষ্টা করতেই সামনে পড়ে যায় স্কুলের গাড়িটি। চালক বিপদ বুঝে পাশ কাটানোরও চেষ্টা করে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বেসরকারি রুটের বাসটি স্কুলগাড়ির এক ধারে ধাক্কা মারে। ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি বাঁ দিকে ঘুরে ফুটপাথের উপরে উঠে গিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। এর পরে বেসরকারি বাসটিও ধাক্কা মারে ডিভাইডারে।
আকস্মিক এই ঘটনায় বাসের মধ্যেই আসন থেকে ছিটকে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। অল্পবিস্তর জখম হয় অনেকেই। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক ছাত্রীর সিটি স্ক্যান করা হয়। যদিও তাতে অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি। তাকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। দুর্ঘটনায় আহত সল্টলেকের ওই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী দেবাঞ্জলি চট্টোপাধ্যায় জানায়, বাসে তখন ৪-৫ জন ছিল। হঠাৎ একটা বাস তাদের স্কুলগাড়ির কাছে চলে আসে। তার পরেই তাদের গাড়িটি বাঁ দিকে ঘুরে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছিটকে পড়ে তার হাত-পায়ে আঘাত লাগে। দুর্ঘটনায় আহত দ্বিতীয় শ্রেণির আর এক ছাত্রী নয়নিকা প্রধানের মাথায় আঘাত লেগেছে। তাঁকে চিকিৎসকেরা বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর মা অনুসূয়া প্রধান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই রাস্তায় বেসরকারি রুটের বাসের বহু চালকই কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা চলে। নিয়মিত ভাবে রেষারেষি কিংবা ওভারটেকিংয়ের ঘটনাও ঘটে। যেই জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই মোড়ের পাশে একটি সার্ভিস রোড রয়েছে। মূল রাস্তায় সিগন্যাল বন্ধ থাকলেই বহু গাড়ি ওই সার্ভিস রোড ধরে মোড়টি পেরোনোর চেষ্টা করে। তার জেরেই অনেক ক্ষেত্রে এমন দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানান, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই বেসরকারি রুটের বাস ও তার চালককে আটক করা হয়েছে।
পুলিশের একাংশের বক্তব্য, বারবার করে সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে। চালক ও খালাসিদের নিয়ে রীতিমতো কর্মশালাও করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও হুঁশ ফিরছে না একাংশের। কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে বিধাননগর পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy