Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভিজল একুশ, তবু ঘাটতি রইল বৃষ্টিতে

হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত দশ বছরে এ দিনটিতে সব চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল ২০১১ সালে। ৫৫.৮ মিলিমিটার। সেই বছরই রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ওই বছরের জুলাইয়ে সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল ২১ তারিখেই।

আড়াল: সমাবেশের পথে মাথা বাঁচাতে ভরসা ছাতা ও ত্রিপল। শনিবার, শিয়ালদহে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

আড়াল: সমাবেশের পথে মাথা বাঁচাতে ভরসা ছাতা ও ত্রিপল। শনিবার, শিয়ালদহে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০১:১৯
Share: Save:

প্রতিবার হয়, এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। বৃষ্টিতে ভিজল ২১ জুলাই। তুমুল বর্ষণ না-হলেও ঝিরঝিরে বৃষ্টি সঙ্গী হয়ে রইল তৃণমূলের জনসভার।

শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। ফলে শাসকদলের গোটা সমাবেশই ছিল বৃষ্টিস্নাত। ভিজতে ভিজতেই কর্মী-সমর্থকেরা হাজির হন ধর্মতলায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও একাধিক বার বৃষ্টির কথা শোনা গিয়েছে। হাওয়া অফিস অবশ্য জানিয়েছে, গত দশটি ২১ জুলাইয়ের নিরিখে এ দিন বৃষ্টিপাত কমের দিকেই ছিল। সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৭.৭ মিলিমিটার।

হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত দশ বছরে এ দিনটিতে সব চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল ২০১১ সালে। ৫৫.৮ মিলিমিটার। সেই বছরই রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ওই বছরের জুলাইয়ে সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল ২১ তারিখেই। আর সব চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছিল ২০০৮ সালে। মাত্র ০.২ মিলিমিটার। গত বছর ২১ জুলাইয়ে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৪২.৭ মিলিমিটার। অর্থাৎ, গত দশ বছরে বৃষ্টির পরিমাণের নিরিখে ২০১৭-র ২১ জুলাই রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। তথ্য বলছে, ২০১১ ও ২০১৭-কে বাদ দিলে বাকি বছরের ২১ জুলাইয়ে তেমন একটা বৃষ্টি হয়নি। তার মধ্যে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০ মিলিমিটারও পেরোয়নি, এমন চারটে বছর রয়েছে। ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৬ সালের ২১ জুলাই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬, ৩.৯ এবং ৮ মিলিমিটার। এক আবহবিদের কথায়, ‘‘২১ জুলাই বরাবর দারুণ বৃষ্টি হয়েছে, এমনটা নয়। ব্যতিক্রম শুধু ২০১১ সাল। বাকি বছরগুলিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তেমন উল্লেখযোগ্য নয়!’’

আবহবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, জুন মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তবু ভাল ছিল। গত ১২ জুন ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল, চলতি মরসুমে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমায় যা সর্বাধিক। তবে জুন মাসে শহরের সর্বত্র সমান ভাবে বৃষ্টি হয়নি। শহরে বিচ্ছিন্ন ভাবে বৃষ্টি হয়েছে, যা বর্ষার পরিবর্তিত চরিত্রের দিকেই ইঙ্গিত করছে।

আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, কলকাতা-সহ অন্য জায়গায় মৌসুমি বায়ু ঢুকলে যে একই ভাবে বৃষ্টি হবে, তার নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি এলাকাভিত্তিক বৃষ্টিপাত বেড়ে গিয়েছে, যা বৃষ্টির চরিত্র বদলের দিকেই ইঙ্গিত করছে। কোনও কোনও এলাকায় মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে, কারণ সহায়ক পরিবেশ তৈরি হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। যদিও জুলাই মাসে তেমন বৃষ্টি হয়নি বলেই আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর। উল্টে গত কয়েক দিনে ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করেছেন সাধারণ মানুষ। তবে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপরে গভীর নিম্নচাপের কারণে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘এ বছর এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে ৫০ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। তবে রবিবারও বৃষ্টি হবে।’’

গত ১০ বছরে ২১ জুলাইয়ের বৃষ্টি

• ২০০৮ ০.২

• ২০০৯ ২৫.৪

• ২০১০ ৬

• ২০১১ ৫৫.৮

• ২০১২ ২৭.৮

• ২০১৩ ১৪.২

• ২০১৪ ৩.৯

• ২০১৫ ২২.৬

• ২০১৬ ৮

• ২০১৭ ৪২.৭

• ২০১৮ * ১২.৩

( * বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত)

হিসেব মিলিমিটারে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE